সুদানে মার্কিন দূতাবাসের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা

সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনীর দ্বন্দ্বের জেরে উত্তাল সুদানে কূটনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল রোববার দেশটিতে অবস্থিত দূতাবাস থেকে নিজেদের কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। খবর আল জাজিরা।

জো বাইডেন

সুদানের বর্তমান অবস্থায় নিজেদের কূটনীতিক এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল রোববার ‘ফাস্ট অ্যান্ড ক্লিন’ নামক অভিযানের মাধ্যমে প্রায় একশজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর জয়েন্ট স্টাফের পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডগলাস সিমস জানান, যুক্তরাষ্ট্রের নেভি সিলস ও সেনাবাহিনীর বিশেষ ফোর্সের সদস্যরা ‘ফাস্ট অ্যান্ড ক্লিন’ অভিযানে অংশ নেয়। উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া তিনটি চিনুক হেলিকপ্টার জিবুতি থেকে ইথিওপিয়া হয়ে সুদানে যায়। এক ঘণ্টার কম সময়ের এ অভিযানে তারা মার্কিন কূটনীতিক, দূতাবাস কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সেখান থেকে সরিয়ে আনতে সক্ষম হয়।

জ্বলছে সুদান

মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে সহায়তা করায় জিবুতি, ইথিওপিয়া ও সৌদি আরবকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী খার্তুম থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কর্মীদের নিরাপদে বের করে আনতে বিশেষ অভিযান চালিয়েছে। পরে সুদানের সংঘাত অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

কূটনীতিকদের সরিয়ে নেওয়ার পর খার্তুমে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এক টুইট বার্তায় মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কূটনৈতিকদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে এই মুহূর্তে সুদানে অবস্থানরত অন্য মার্কিন নাগরিকদের সরিয়ে আনা সম্ভব নয়।

গত সপ্তাহে হঠাৎ করেই সুদানের ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে লড়াই শুরু হয়। দুই পক্ষের লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন যথাক্রমে সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান ও আরএসএফের প্রধান সাবেক মিলিশিয়া নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো ওরফে হেমেদতি। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৪১৩ জন নিহত হয়েছেন এবং হাজার হাজার লোক আহত হয়েছেন। প্রচুর লোক বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। অনেকে বিদ্যুৎ, পানি ছাড়াই নিজ নিজ বাড়িতে বন্দী অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।

সুদানের এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও যুক্তরাজ্য, মিশর, পাকিস্তান ও কানাডার বেশকিছু নাগরিককে সমুদ্রপথে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে বিমানবন্দর বন্ধ এবং আকাশপথ অনিরাপদ হওয়ায় হাজার হাজার দূতাবাস কর্মী, সাহায্যকর্মী ও শিক্ষার্থী সুদান ত্যাগ করার অবকাশ পাননি।