আরব আমিরাতে রোজা পালন করছেন অনেক অমুসলিমও

মুসলমানদের জন্য অন্যরকম একটি মুহূর্ত ইফতারের সময়। সামনে প্রচুর খাবার সাজানো থাকলেও সূর্য অস্ত যাওয়া কিংবা মাগরিবের আজান কানে ভেসে আসার আগ পর্যন্ত কেউ তা খাওয়ার চেষ্টা করেন না। বিশ্বের সবদেশে এ দৃশ্যটি সাধারণ হলেও সংযুক্ত আরব আমিরাতে এটি যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। সেখানে কেবল মুসলিমরাই নয়, অন্য ধর্মের মানুষজনও রোজা রাখছেন। আজান দেওয়ামাত্র তারাও শুরু করছেন ইফতার। খবর খালিদ টাইমস।

আরব আমিরাতে একসঙ্গে ইফতার করছেন মুসলিম-অমুসলিম সবাই 

জানা যায়, মূলত আধ্যাত্মিক অনুশীলনের অংশ হিসেবে কিংবা মুসলিম কর্মী ও বন্ধুদের প্রতি সহমর্মিতা-সহানুভূতি জানাতে রোজা রাখছেন ভিন্ন ধর্মের মানুষজন। শুধু রোজা নয়, বিভিন্ন বিশ্বাসের এসব লোকজন একে অন্যের ঐতিহ্য ও উৎসব উদযাপনে অংশ নিয়ে থাকেন, যা আমিরাতের বৈচিত্র্যময় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে অনন্য ভূমিকা রাখছে।

আমিরাতে এভাবে যারা রোজা পালন করেন, তাদের একজন হচ্ছেন ৬২ বছর বয়সী মোহন দাস। মুসলমানদের মতো তিনিও প্রতিদিন ইফতার করার জন্য মাগরিবের আজানের অপেক্ষায় থাকেন। গত ১৯ বছর ধরে তিনি পুরো রমজান মাস জুড়ে রোজা রাখছেন।

মোহন দাস

এ ব্যাপারে তার অনুভূতিও পরিষ্কার। তিনি বলেন, রোজা ছাড়া রমজান মাস আমি কল্পনাও করতে পারি না। এ রোজা রাখার মাধ্যমে আমি শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিকভাবে উপকৃত হই। প্রথম প্রথম আমি আমার মুসলিম সহকর্মীদের রোজা রাখতে দেখি। পরে তাদের সমর্থন জানাতে আমিও রোজা রাখা শুরু করি। এতে আমি নানাবিধ উপকার পেয়েছি। তাই এখন আমি নিয়মিত রোজা পালন করি।

মোহন দাস দুবাই প্রবাসী দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্যের বাসিন্দা। ১৯৯৩ সালে আরব আমিরাতে গিয়ে মোহন দাস দুবাই মেরিন বিচ রিসোর্টে কাজ শুরু করেন। শুরু থেকেই মুসলিম সহকর্মীদের ঐতিহ্য ও অনুশীলনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রমজানের রোজা রাখা শুরু করেন মোহন দাস। ২০০৪ সাল থেকে রমজান মাসের ৩০ দিনই রোজা পালন করছেন তিনি।

মোহন দাস জানান, করোনা মহামারির সময় ২০২১ ও ২০২২ সালে তিনি ভারতে ছিলেন। সে সময়ও তিনি রোজা রেখেছেন। তাকে অনুসরণ করে এখন তার মেয়েও রোখা রাখতে শুরু করেছে।

মোহন দাস বলেন, রোজা আমার জীবনে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। তাই আমি আমার অমুসলিমদেরও তা পালনের আমন্ত্রণ জানাব।