কথা রাখতে পারবেন তো এমবাপ্পে?

কাতার বিশ্বকাপের পর অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ফ্রান্স গোলরক্ষক ও অধিনায়ক হুগো লরিস। দুদিন আগে ২৪ বছর বয়সী কিলিয়ান এমবাপ্পের কাঁধে নেতৃত্বের জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছেন ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের (এফএফএফ) কর্তাব্যক্তিরা। দায়িত্বটা অবশ্য সানন্দ্যেই বুঝে নিয়েছেন এমবাপ্পে। তার নেতৃত্বে শুরু হচ্ছে ফ্রান্সের নতুন অধ্যায়।

কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে

নতুন শুরুতে আজ রাতে অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে এমবাপ্পে অ্যান্ড কোংকে। ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ফরাসিরা মুখোমুখি হবে জায়ান্ট নেদারল্যান্ডসের। এই ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে এমবাপ্পে প্রতিশ্রুতি দিলেন ব্যতিক্রমী একজন অধিনায়ক হওয়ার। তবে আর্মব্যান্ড পরলেও নিজেকে বদলাবেন না বলে জানালেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে এমবাপ্পে বলেছেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে আমার দুর্দান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তবে আমাদের দলে গুরুত্বপূর্ণ অনেক খেলোয়াড় আছেন। আমি কোনো খেলোয়াড় কিংবা কোনোকিছুর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেবো না। আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ দল এবং একসঙ্গে খেললে আমরা যে দুর্দান্ত কিছু অর্জন করতে পারি সেটি ইতোপূর্বে দেখিয়েছি।'

ফ্রান্স দলে কিলিয়ান এমবাপ্পের সহকারী হিসেবে খেলতে হবে অ্যান্তনিও গ্রিজম্যানকে

এমবাপ্পে যোগ করেন, ‘আমি (দল) পরিবর্তন করতে যাচ্ছি না। ড্রেসিংরুমে আমি যা বলতে চাই সেটি লোকজন শুনুক। কেবল আমার কথাগুলোর সঠিক ব্যবহার করতে হবে।’ ফ্রান্স দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই এমবাপ্পের চেয়ে অভিজ্ঞ। কিছু লোকের ধারণা ছিল ফরাসিদের হয়ে ১১৭টি ম্যাচ খেলা অ্যান্তনি গ্রিজমান পরবর্তী অধিনায়ক হবেন।

কিন্তু ৩২ বছর বয়সী ফরওয়ার্ডের চেয়ে ২৪ বছরের তরুণকেই বেছে নিয়েছেন ফ্রান্সের প্রধান কোচ দিদিয়ের দেশাম। এ নিয়ে নাকি দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে ফরাসিদের ড্রেসিংরুম! সংবাদমাধ্যমে এমন খবরও বেরিয়েছে। কথাটি শ্রেফ গুজব বলে উড়িয়ে দেওয়ার উপায় নেই। এমবাপ্পের কথাতেই ড্রেসিংরুমে বিদ্রোহের ইঙ্গিত মিলছে। তা কী বলেছেন এমবাপ্পে?

শুনুন তার মুখেই, ‘আমি অ্যান্তনির (গ্রিজম্যান) সঙ্গে কথা বলেছি। কারণ, তিনি (ফ্রান্সের নেতৃত্ব না পেয়ে) হতাশ হয়েছিলেন। সত্যি বলতে এটাই স্বাভাবিক এবং বোধগম্য। আমি তাকে বলেছি যে যতক্ষণ পর্যন্ত আমি অধিনায়ক এবং সে সহ-অধিনায়ক ততক্ষণ পর্যন্ত আমি তার চেয়ে ওপরে যেতে পারব না। কারণ, সে ফ্রান্সের অভিজ্ঞ একজন খেলোয়াড়। যেটা আমার নেই।’

এমবাপ্পে যোগ করেন, ‘তার (গ্রিজম্যানের) মর্যাদা সবার ওপরেই থাকবে এবং তাকে দলের সবাই পছন্দ করেন। তার যা অভিজ্ঞতা সেটি আমাদের কাজে না লাগানো হবে লজ্জাজনক।’ নেতৃত্বের চাপ প্রসঙ্গে এমবাপ্পে বলেছেন, ‘সব দায়-দায়িত্ব একপাশে রাখলে এটা উপভোগের বিষয়। যখন আমি এটা (ফ্রান্সের নতুন অধিনায়ক হওয়ার খবর) জানতে পেয়েছিলাম তখন খুব খুশি হয়েছিলাম।’

দীর্ঘ সময় ফ্রান্সকে আগলে রেখেছেন লরিস। এমবাপ্পে পারবেন তো? উত্তরে ফরাসিদের নতুন কাপ্তান বলেছেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে প্রত্যেকের ব্যক্তিত্ব আলাদাভাবে কাজ করে। আমি হুগোর (লরিস) মতো নই, হুগো-ও আমার মতো নন। আমার মনে হয় না কোচ (দেশাম) আমাকে অধিনায়ক বানিয়েছেন এটা ভেবে যে, আমি হুগোর মতো হবো।’