চেলসির দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন, বিদায় ডর্টমুন্ডের

প্রথম লেগে দুই চ্যাম্পিয়নের লড়াইটা উত্তেজনার রেণু ছড়িয়েছে। দ্বিতীয় লেগেও এর পুনরাবৃত্তি হলো। এবার অবশ্য ফলটা উল্টে গেল। বরুসিয়া ডর্টমুন্ড নয়, ফিরতি লেগে জয়োৎসবে মেতে উঠল চেলসি। মঙ্গলবার রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের মহারণে ডর্টমুন্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে ইংলিশ ক্লাবটি উঠে গেল কোয়ার্টার ফাইনালে।

দুই চ্যাম্পিয়নের লড়াইয়ে শেষ হাসি হেসেছে চেলসি। বিদায় নিলো বরুসিয়া ডর্টমুন্ড

ঘরের মাঠ সিগনাল ইদুনা পার্কে প্রথম লেগে ১-০ গোলে জিতেছিল জার্মান ক্লাব ডর্টমুন্ড। দ্বিতীয় লেগে নিজেদের মাঠ স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে পেয়ে সেই হারের মধুর প্রতিশোধটাই নিলো চেলসি। দুই লেগ মিলিয়ে ২-১ গোলের অগ্রগামিতায় পশ্চিম লন্ডনের ক্লাবটি টিকিট কাটল শেষ আটের। এই হারে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেল তুখোড় ফর্মে থাকা বরসিয়া ডর্টমুন্ড।

লন্ডনে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। দুই দলের সামনেই সুযোগ এসেছে কয়েকটি। কিন্তু দুই দলের গোলরক্ষকদ্বয় হতাশ করেন। তবে বেশি পরীক্ষা দিতে হয়েছে চেলসি গোলকিপার কেপাকে। তিনি না থাকলে এদিন হয়ত বড় বিপদে পড়তে পারত ব্লুজরা। ডর্টমুন্ড খেলোয়াড়দের কয়েকবার গোলবঞ্চিত করেন কেপা।

চেলসির জন্য গোলরক্ষক আলেক্সান্ডার মায়ারের চেয়েও বড় প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছিল দুর্ভাগ্য। প্রথমার্ধে কাই হাভার্টজের দুর্দান্ত শটটা ডান পোস্টে লেগে বাঁ পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। জার্মান ফরওয়ার্ড একটু পর অবশ্য জালে বল পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু গোল বাতিল হয় অফসাইডের কারণে। আসলে দোষটা ছিল ইংলিশ ফরওয়ার্ড রহিম স্টার্লিংয়ের। দ্বিতীয়ার্ধে চেলসির আরও একটা গোল বাতিল হয় অফসাইডের ফাঁদে পড়ায়।

প্রথমবার ডর্টমুন্ড গোলরক্ষককে একা পেয়েও জালে বল পাঠাতে পারেননি স্টার্লিং। তার শট ঠেকিয়ে দেন মায়ার। ফিরতি শটে ডর্টমুন্ডের জালে বল জড়ান হাভার্টজ। কিন্তু শটের সময় মায়ারের পাশেই ছিলেন স্টার্লিং। যদিও আক্রমণে এ নিয়ে দ্বিতীয় অফসাইডের ফাঁদে পড়েন তিনি। সেই হতাশা বিরতির আগেই কাটিয়ে ওঠেন স্টার্লিং। করেন দারুণ এক গোল। লিড নেয় চেলসি (১-০)। দুই লেগের হিসেবে পশ্চিম লন্ডনের ক্লাবটি ফেরে সমতায় (১-১)। ব্যাক ফুটে থেকে বিরতিতে যায় ডর্টমুন্ড।

সেখান থেকে ফিরে আরেক বিপদ অতিথিদের ঘাড়ে। বিপদ ডেকে আনেন মারিয়াস ভলফস। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বেন চিলওয়েলের ক্রসে ডি-বক্সে হ্যান্ডবল করেন এই ডিফেন্ডার। ভিএআরের সহায়তা নিয়ে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত জানান রেফারি। সেখানে আবার আরেক নাটক। স্পট কিক থেকে হাভার্টজ যে শট নেন তা আবারও প্রতিহত হয় ডর্টমুন্ডের পোস্টে লেগে!

কিন্তু তার প্রথম শট বাতিল হয়ে যায় বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের তাড়াহুড়ার কারণে। হাভার্টজ শট নেওয়ার আগেই ডি-বক্সের ভেতর ডুকে পড়েন ডর্টমুন্ডের কয়েকজন খেলোয়াড়। দ্বিতীয়বার পেনাল্টি নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যায় চেলসি। এবার অবশ্য ভুল করেননি ম্যাচজুড়ে দুর্দান্ত খেলা হাভার্টজ। তার দ্বিতীয় পেনাল্টি শটে গোলপোস্টও বেরসিক আচরণ করেনি, সেই ডান পাশ দিয়েই জালে বল জড়ান জার্মান ফরওয়ার্ড। উৎসবে মেতে ওঠে চেলসি।

দুই গোল হজম করা ডর্টমুন্ড অন্তত একটি গোল ফিরিয়ে দিলে লড়াইয়ে থাকতে পারত। কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টা করেও চেলসি গোলরক্ষক কেপাকে ফাঁকি দিতে পারেনি তারা। ফলে প্রথম লেগে এগিয়ে থাকার পরও বিদায় নিতে হলো ডর্টমুন্ডকে। আর দারুণ প্রত্যাবর্তনে শেষ আটে উঠে গেল চেলসি। দুর্দান্ত এই জয়ে আপাতত চেলসি কোচ গ্রাহাম পটারের ঝুলে থাকা চাকরিটাও বেঁচে গেল!