ফিফার কাছে অভিযোগ করেছে মরক্কো

কাতার বিশ্বকাপজুড়ে বিতর্ক হয়েছে রেফারিং নিয়ে। প্রশ্ন উঠেছে কিছু রেফারির ম্যাচ পরিচালনার যোগ্যতা নিয়েও। গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু ম্যাচে বাজে রেফারিং বিশ্বকাপ রোমাঞ্চ কিছুটা হলেও ম্লান করে দিয়েছে। বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পেনাল্টি প্রসঙ্গ। পেনাল্টি দেওয়া না দেওয়া নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে ফুটবল দুনিয়ায়।

ফিফার কাছে অভিযোগ করেছে মরক্কো

এবারের আসরের সেমিফাইনালের দুটি ম্যাচ নিয়েই বাজে রেফারিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। প্রথমটিতে আর্জেন্টিনাকে পেনাল্টি দিয়ে বিতর্কের ঝড় তুলেছেন রেফারি। পরের সেমিফাইনালে মরক্কোকে পেনাল্টি বঞ্চিত করা নিয়ে আলোচনায় এসেছেন মেক্সিকান রেফারি সিজার রামোস। এ নিয়ে ফিফার কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানিয়েছে আফ্রিকার দলটি।

ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের ২২তম আসরের সবচেয়ে বড় চমক ছিল মরক্কো। আফ্রিকান প্রথম দেশ হিসেবে দলটি ওঠে সেমিফাইনালে। কিন্তু ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ফ্রান্সের কাছে ২-০ গোলে হেরে যান হাকিমি-জিয়াচর। হারলেও ম্যাচজুড়ে দুর্দান্ত খেলেছেন মরোক্কানরা। মাথা উঁচু রেখেই দেশে ফিরবেন তারা।

ফ্রান্সের বিপক্ষে হারের পরও উচ্ছ্বাসিত দেখা গেছে মরক্কোকে। ফাইনালে উঠতে না পারা নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই তাদের। তবে সেমিফাইনালে রেফারিং নিয়ে অভিযোগ আছে আফ্রিকান প্রতিনিধিদের। টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার পর বিরতির আগে দুটি পেনাল্টি বঞ্চিত হওয়া নিয়ে অভিযোগ তুলেছে উত্তর আফ্রিকার দেশটি।

ফ্রান্সের ম্যাচের পাঁচ মিনিটে গোল হজম করে বসে মরক্কো। কাতার বিশ্বকাপে এই প্রথম মরক্কানদের জালে বল জড়ালেন প্রতিপক্ষের কোনো ফুটবলার। এই গোলের শোধ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন হাকিমিরা। মুহুর্মুহু আক্রমণ করেন তারা। মরক্কোর দাবি, প্রাপ্য পেনাল্টি দুটি পেলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতো পারতো।

সেমিফাইনালে ‘অদ্ভুত রেফারিং’য়ের শিকার হয়েছে বলেও জানায় মরক্কো। বৃহস্পতিবার রাতে নিজেদের অফিসিয়ার ওয়েবসাইটে মরোক্কান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, ‘দ্য রয়্যাল মরোক্কান ফুটবল ফেডারেশন প্রবলভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছে, মরক্কো এবং ফ্রান্স ম্যাচ পরিচালনা করা সিজার রামোসকে নিয়ে। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে রেফারি মরক্কানদের প্রতি অবিচার করেছেন।’

মরক্কোর একটি পেনাল্টি নিয়ে সংশয় থাকলেও অন্যটি প্রায় নিশ্চিত ছিল। ফ্রান্সের ডি-বক্সে সোফিয়ান বাউফলকে ফাউল করেন থিও হার্নান্দেজ। পেনাল্টির আবেদন জানান মরোক্কান ফরোয়ার্ড। কিন্তু পেনাল্টি না দিয়ে তাকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। রেফারির এমন সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন সাবেক ফুটবলার ও কাতার বিশ্বকাপের ধারাভাষ্যকার রিও ফার্দিন্যান্ড।

বিবিসি স্টুডিওতে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিংবদন্তি বলেছেন, ‘আমার মনে হয় এটা ফাউল ছিল। কাজেই এটা কেন পেনাল্টি নয়? আমার মনে হয় এটা একটা পেনাল্টি, কিন্তু অবশ্যই সে (বাউফল) হলুদ কার্ড প্রাপ্য নয়।’ মরোক্কান ফরোয়ার্ডকে ট্যাকল করে হার্নান্দেজও পড়ে যান মাটিতে। পরে রেফারি পেনাল্টির দাবি উড়িয়ে বাউফলকে উল্টো কার্ড দেখান।

নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে এটাই মরক্কোর সেরা সাফল্য। এর আগে ১৯৮৬ বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে উঠেছিল তারা। কাতারে এসে নিজেদের ছাড়িয়ে যাচ্ছে আফ্রিকান প্রতিনিধিরা। এই বিশ্বকাপে তাদের আরও একটি প্রাপ্তির সুযোগ আছে। আগামী তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবেন মরক্কানরা।