কাতারে বিপদে ডাচ কোচের পরিবার

কাতার বিশ্বকাপের সমালোচকদের মধ্যে একজন লুইস ফন গাল। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিকে টুর্নামেন্টে আয়োজনের স্বত্ব দেওয়ায় আবারও সমালোচনা করলেন নেদারল্যান্ডস প্রধান কোচ। তার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবরা কাতারে এসেই বিপদে পড়েছেন। থাকার জায়গা পাচ্ছেন না তারা। তাতে চটেছেন ডাচ কোচ।

লুইস ফন গাল

কাতারের মোট জনসংখ্যা প্রায় তিন মিলিয়ন। মধ্যপাচ্যের দেশটি আয়তনেও বেশ ছোট। এমন একটি জায়গায় বসতে যাচ্ছে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর। এতো ‘ছোট’ দেশে টুর্নামেন্ট সফলভাবে আয়োজন করতে পারবে কিনা এনিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার শেষ নেই।

কারণ, বিশ্বকাপের দেশ লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। বাসস্থান, খাওয়া-দাওয়া এবং চলাফেরায় সংকট দেখা দেয়। কাতার ‘ছোট’ দেশ হওয়ায় সমস্যাগুলো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সেখানে গিয়ে বিপদে পড়েছেন অনেক পর্যটক ও ফুটবলপ্রেমী।

সেই দলে আছেন ফন গালের পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও কাছের মানুষজন। এতে খুব স্বাভাবিকভাবেই চটেছেন নেদানল্যান্ডস কোচ। এ নিয়ে বুধবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘এটা খুব ছোট একটা দেশ। থাকার জায়গা খুঁজতে আমার পরিবার এবং বন্ধুদের অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে।’

ফনগাল আবারও বললেন, কাতারকে বিশ্বকাপের আয়োজন করতে দেওয়ার সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল। ডাচ কোচের মতে ফুটবলখেলুড়ে দেশকে আয়োজন দেওয়া উচিত ছিল, ‘আপনাকে ফুটবলের দেশে খেলতে হবে। একটা সময় ফিফার লক্ষ্য সব জায়গায় ফুটবল উৎসব ছড়িয়ে দেওয়া। আর এ কারণেই আমরা এখানে খেলতে এসেছি।’

৭১ বছর বয়সী কোচ যোগ করেন, ‘কিন্তু ফুটবলে আপনাকে আরও অভিজ্ঞ হতে হবে। যাতে সবকিছু সহজে মোকাবেলা করা যায় স্বস্তি নিয়ে চলাফেরা করা যায়।’ অবশ্য একগাদা অভিযোগ করলেও কাতারে বেশ ভালো আছে নেদারল্যান্ডস ফুটবল দল। এই আতিথেয়তার জন্য অবশ্য কাতারের প্রশংসা করেছেন ফন গাল, ‘এখানকার সাংগঠনিক, মাঠ এবং সব সুযোগ-সুবিধা আছে। এটা খুব ভালো দিক।’

সবশেষ ২০১৪ বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। ওই আসরের তৃতীয় সেরা দল হয়েছিল ডাচরা। আধুনিক ফুটবলের জনকেরা টিকিট পায়নি গত আসরের। দীর্ঘ আট বছর পর ডাচরা বিশ্বমঞ্চে ফিরছে ফন গালের অধীনে। নেদারল্যান্ডসে তিনি কাজ করছেন তৃতীয় মেয়াদে।

এবার অনেক দূর যাওয়ার স্বপ্ন ফন গালের, ‘আমি বিশ্বাস করি, এই পৃথিবীর সেরা খেলোয়াড়রা আমার দলে নেই। কিন্তু যেভাবে দলটা বেড়ে উঠেছে এবং দলের যা কৌশল তাতে আমি খুশি। আমার বিশ্বাস, আমরা অনেক দূর যেতে পারি। এ জন্য অবশ্য ভাগ্যকে পাশে পাওয়া-ও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমি কল্পনা করছি টুর্নামেন্ট শেষে আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পারি।’

আগামী ২১ নভেম্বর আফ্রিকান নেশনস কাপজয়ী সেনেগালের মুখোমুখি হবে নেদারল্যান্ডস। ‘এ’ গ্রুপের অন্য দুই ম্যাচে স্বাগতিক কাতার ও ল্যাটিন আমেরিকান দল ইকুয়েডরের মুখোমুখি হবে ডাচরা। গ্রুপে পরিষ্কার ফেভারিট ইউরোপিয়ান জায়ান্টরা। তবে বৈশ্বিক মঞ্চে কোনোকিছুরই নিশ্চয়তা দেওয়া কঠিন। কখন যে কী হয়ে যায়!