১৯৩৪ বিশ্বকাপ: মুসোলিনির ফ্যাসিবাদ ও ইতালির স্বপ্নপূরণ
- Details
- by খেলাধুলা ডেস্ক
প্রথম বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন ও স্বাগতিক দুটোই ছিল উরুগুয়ে। কিন্তু পরেরবার বিশ্বকাপেই অংশ নেয়নি ল্যাটিন আমেরিকার জায়ান্টরা। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দলের সরে দাঁড়ানো বা পরের আসরে অংশ না নেওয়া ঘটনার ওটাই ছিল শুরু ও শেষ। মূলত আর্থিক সংকটের কারণেই বিশ্বকাপ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছিল গুরুগুয়েনরা। কে বলবে এই দেশটাই প্রথম বিশ্বকাপের সব দলের খরচ একা বহন করেছিল!
১৯৩৪ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিক ইতালি
১৯৩০ বিশ্বকাপ গণবয়কট করেছে ইউরোপের দেশগুলো। ১৯৩৪ সালে পরের আসরটা প্রায় উল্টো। ল্যাটিন আমেরিকার অনেক দেশই অংশ নিতে পারেনি প্রতিযোগিতায়। কারণ ওই সময় মহাদেশটিতে দেখা দিয়েছিল তীব্র অর্থনৈতিক মন্দা। এখান থেকে টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারে কেবল দুটি দেশ- ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। সেটা বিশ্বকাপ বড় হওয়ার পরও। আসরে অংশগ্রহণ করে ১৬টি দল। অভিষেক হয় ১০ দলের।
দ্বিতীয় বিশ্বকাপের আয়োজন করে ইউরোপিয়ান জায়ান্ট ইতালি। এবারই প্রথম চালু হয় বাছাইপর্ব। যেখানে অংশ নেয় ৩২টি দেশ। ইউরোপ মহাদেশ থেকে সর্বোচ্চ ১২টি দেশ টিকিট পায়। আফ্রিকা মহাদেশ থেকে টিকিট কাটে মিশর। টুর্নামেন্টে আসা অন্য দলটি যুক্তরাষ্ট্র। টুর্নামেন্টের চেকোস্লোভাকিয়াকে হারিয়ে শিরোপা জেতে স্বাগতিক ইতালি।
কিন্তু ইতালির বিশ্বজয় ছাপিয়ে আলোচনায় থাকল বেনিতো মুসোলিনির ফ্যাসিবাদী দর্শন। প্রথম ধাক্কাতেই ছেঁটে ফেলা হয় ‘দুর্বল’ দলগুলোকে। অর্থাৎ টুর্নামেন্টের শুরুটা হয় নক আউট পর্ব দিয়ে। ২৭ মে, একই দিনে ম্যাচ গড়ায় আটটি। প্রথম ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে ৭-১ গোলে চূর্ণ করে মুসোলিনির ইতালি। টুর্নামেন্টজুড়ে রেফারিংয়ের মান ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।
আসরের কোয়ার্টার ফাইনাল কেবল ইউরোপময়। টুর্নামেন্ট থেকে শুরুতেই ছিটকে যায় ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হয় ওই সময়কার সেরা দুই দল অস্ট্রিয়া ও হাঙ্গেরি। মূল ফুটবলের চেয়ে খেলাটি হয়ে ওঠে শারীরীক শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ। প্রবল মারপিটের সেই ম্যাচে অস্ট্রিয়া ২-১ গোলে জেতে।
পরবর্তীতে মাচটিকে ‘দাঙ্গা’ হিসেবে আখ্যা দেন অস্ট্রিয়ার কোচ হুগো মেইসেল। ওই ম্যাচটা যদি ‘দাঙ্গা’ হয়ে থাকে তাহলে ইতালি-স্পেন মহারণ ছিল বীভৎস। সাড়ে তিন ঘণ্টা লড়াইয়ের পর ফল দাঁড়ায় ১-১। তুমুল সংঘর্ষের পর ইনজুরি নিয়ে ইতালির চারজন ও স্পেনের সাতজন খেলোয়াড় চলে যান মাঠের বাইরে।
সেমিফাইনাল নিয়ে আশঙ্কা ছিল আগে থেকেই। যেখানে মুখোমুখি হয় ইতালি-অস্ট্রিয়া ও চেকোস্লোভাকিয়া-জার্মানি। যেখানে নেজেদলির হ্যাটট্রিকে ৩-১ গোলে জার্মানিকে হারায় চেকোস্লোভাকিয়া। আর ফ্যাসিবাদী ইতালিকে হারায় মিয়াজ্জার একমাত্র গোলে। এই ম্যাচে রেফারিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল শৈল্পিক ফুটবল খেলা অস্ট্রিয়া।
কিন্তু তাদের অভিযোগ টেকেনি মুসোলিনির প্রভাবে। ফাইনালে চেকোস্লোভাকিয়াকে অতিরিক্ত সময়ের গোলে হারিয়ে জুলে রিমে ট্রফি জেতে স্বাগতিক ইতালি। এই টুর্নামেন্ট দিয়ে প্রথমবার মুনাফার মুখ দেখে ফিফা। প্রতিযোগিতা সফল করতে সর্বোচ্চ প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়। এতেই ফুটে ওঠে ফ্যাসিজম। বিশ্বকাপটিকে পরবর্তীতে স্বৈরশাসকের টুর্নামেন্ট বলেও আখ্যা দেওয়া হয়।
একনজরে ১৯৩৪ বিশ্বকাপ
স্বাগতিক ও চ্যাম্পিয়ন: ইতালি
রানার্সআপ: চেকোস্লোভাকিয়া
তৃতীয়স্থান: জার্মানি
অংশগ্রহণ: ১৬টি দল
ভেন্যু: আটটি (আট শহর)
মোট ম্যাচ: ১৭টি
মোট গোল: ৭০টি
ম্যাচ প্রতি গোল: ৪.১২টি
গোল্ডেন বুট: ওল্ডরিচ নেজেদি- ৫ গোল (চেকোস্লোভাকিয়া)
মোট দর্শক: ৩৬৩০০০
ম্যাচ প্রতি দর্শক: ২১৩৫৩
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.