রোনালদো আছেন বলেই বড় স্বপ্ন পর্তুগালের

ইংল্যান্ডে ১৯৬৬ বিশ্বকাপ আসরে বিশ্বমঞ্চে প্রথম পা পর্তুগালের। প্রথম আসরেই বাজিমাত। সেমিফাইনালে উঠে যায় দলটি। তৃতীয় অবস্থানে শেষ করে ভক্তদের প্রত্যাশা বাড়িয়ে উল্টো পথে ছুটতে থাকে পর্তুগালের ফুটবল। পরের চার আসরে বিশ্বমঞ্চে জায়গা পায়নি দেশটি। ১৯৮৬ আসরে ফিরে আবার তিন আসরে বিরতি। তবে ২০০২ থেকে প্রতিটি বিশ্বকাপে খেলছে পর্তুগিজরা। এবার 'এইচ' গ্রুপ থেকে ঝলক দেখাতে চায় দলটি।

শেষ বিশ্বকাপ রাঙাতে চান রোনালদো

২০০৬ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে ওঠে পর্তুগাল। ১৭ নম্বর জার্সির, ২১ বছরের রোনালদোর যা ছিল প্রথম বিশ্বকাপ। ওই আসরে মাত্র এক গোল করেন তিনি। এখন রোনালদো ৩৭, এখন তিনি সিআর সেভেন। সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলারের স্বপ্ন নিশ্চয় বিশ্বকাপ জয়ের। গ্রুপ পর্ব, শেষ ষোলোর বৃত্ত ভেঙে স্বপ্ন নিশ্চয় ইতিহাসগড়া।

তারকা: কাতার বিশ্বকাপের বড় তারকা রোনালদো। পর্তুগালের সেরা ভরসা ও নেতা। তার গতি কমেছে, ক্লাবে বেঞ্চে কেটেছে অধিকাংশ সময়। তবু গোলমুখে পর্তুগালের সেরা ভরসা এই পর্তুগিজ যুবরাজ। রক্ষণ, মিডফিল্ড ও আক্রমণ মিলিয়ে তার পাশে আছেন দুর্দান্ত সব ফুটবলার। যারা বিশ্বকাপে নিজেদের আগের রেকর্ড ভাঙার সামর্থ্য রাখেন। যারা বড় কিছুর স্বপ্ন দেখেন। যাদের অনেকে ইউরো জিতে প্রমাণিত।

পর্তুগালের ডিফেন্ডার রুবেন দিয়াজ ও জোয়াও ক্যানসেলো খেলেন প্রিমিয়ার লিগের সফলতম দল ম্যানসিটিতে। নুনো মেন্ডিস ও দানিলো পেরেইরা খেলেন পিএসজিতে। আছেন ম্যানইউর ডিয়াগো ডালট, ন্যাপোলির মারিও রুই-এর মতো ডিফেন্ডার। মিডফিল্ডার ব্রুনো ফার্নান্দেজ, বেনার্ড সিলভারা বিশ্বমানের। অ্যাতলেটিকোর তরুণ ফরোয়ার্ড জোয়াও ফেলিক্স কিংবা এসি মিলানের রাফায়েল লিও হতে পারেন বাজির ঘোড়া। গোলবার সামলাতে আছেন পোর্তও তরুণ ডিয়াগো কস্তা।

কিংবদন্তি: পর্তুগালের কিংবদন্তিও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। এছাড়া লুইস ফিগোকেও সেই তালিকায় রাখা যায়। তবে রোনালদোর মতো সফল কেউ নন। ক্লাব ক্যারিয়ারে প্রায় সব ধরনের শিরোপা জিতেছেন তিনি। জাতীয় দলের হয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়ন হন। এবার সোনালি ট্রফিটা ছোঁয়ার স্বপ্ন। তবে বড় দল, সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় হতে দরকার শিরোপা। ২০১৬ সালে রোনালদোর পর্তুগাল ইউরো জিতে বড় দলের খ্যাতি অর্জন করেছে।

প্রধান কোচ: ফার্নান্দো সান্তোসের ৩৫ বছরের কোচিং ক্যারিয়ার। দায়িত্ব পালন করেছেন পর্তুগালের সেরা তিন ক্লাব পোর্তো, স্পোর্টিং সিপি ও বেনফিকায়। পোর্তোর হয়ে জিতেছেন লিগ শিরোপা। গ্রিসের কোচ ছিলেন ২০১০-২০১৪ বিশ্বকাপে। গ্রিসকে ব্রাজিল বিশ্বকাপে তোলেন তিনি। প্রথমবার নকআউট পর্বেও নিয়ে যান। এরপর ২০১৬ সালে দলকে ইউরো জেতান। তবে রাশিয়া বিশ্বকাপে শেষ ষোলোয় বিদায় নেয় পর্তুগাল। কাতারের টিকিট প্লে-অফ খেলে কাটলেও রোনালদো-বেনার্ড সিলভাদের পর্তুগাল অনেকের চোখে বাজির ঘোড়া। এবার অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে দু-একটা কৌশলের ক্যারিশমা দেখাতে পারলেই তার দলের বিশেষ কিছু অর্জন অসম্ভব নয়।

পর্তুগাল:

ফিফা র‍্যাঙ্কিং: ৯

গ্রুপ ‘এইচ’: পর্তুগাল, উরুগুয়ে, ঘানা, দক্ষিণ কোরিয়া।

গ্রুপ পর্বের সূচি:

২৪ নভেম্বর রাত ১০টায় পর্তুগাল-ঘানা, 
২৮ নভেম্বর রাত ১টায় পর্তুগাল-উরুগুয়ে, 
২ ডিসেম্বর রাত ৯টায় দক্ষিণ কোরিয়া-পর্তুগাল।