হঠাৎ বিদায় বলে দিলেন পিকে

মাঠে এবং মাঠের বাইরে সময়টা অনেক দিন ধরেই বাজে যাচ্ছে জেরার্ড পিকের। দীর্ঘদিনের বান্ধবী কলম্বিয়ান পপগায়িকা শাকিরা প্রতারণার অভিযোগ তুলে স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিপর্যয় নেমে আসা পিকে মাঠের ছন্দও হারিয়ে ফেলেছেন। সবমিলিয়ে কঠিন একটা সময় পার করছেন তিনি।

পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারে আগামীকাল শনিবার বিদায়ী ম্যাচ খেলতে নামবেন জেরার্ড পিকে

নিজেকে হারিয়ে খুঁজতে থাকা স্প্যানিশ এই কিংবদন্তি বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎই অবসরের ঘোষণা দিয়ে ফেললেন। আগামী শনিবার ঘরের মাঠ ন্যু ক্যাম্পে পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি খেলতে নামবেন পিকে। ম্যাচটিতে বার্সা ও পিকের প্রতিপক্ষ খর্বশক্তির দল আলমেরিয়া। যদিও বার্সার সঙ্গে পিকের সবশেষ চুক্তির মেয়াদ আছে ২০২৪ সাল পর্যন্ত।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সাড়ে চার বছরের অধ্যায় চুকিয়ে ২০০৮ সালে বার্সেলোনায় যোগ দেন পিকে। ৩৫ বছর বয়সী এই তারকা গতকাল রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একটি ভিডিও পোস্ট করে অবসর ঘোষণা দেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি সবসময়ই বলে এসেছি বার্সাই হবে আমার শেষ ক্লাব।’

পিকে যোগ করেন, ‘ফুটবল আমাকে সবকিছু দিয়েছে। বার্সা আমাকে সবকিছু দিয়েছে। আপনি (সমর্থকরা) আমাকে সবকিছু দিয়েছেন। এবং এখন বাচ্চাটির (পিকে নিজে) স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। আমি এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই যাত্রাটি শেষ করার। আপনি আমাকে চেনেন। শিগগিরই কিংবা দেরিতে আমি ফিরব। আপনাকে আমি ন্যু ক্যাম্পে দেখতে চাই। বার্সা দীর্ঘজীবী হোক। সবসময়।’

২০০৪ সালে বার্সেলোনা যুব দল থেকে উঠে এসেছেন পিকে। ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জার্সিতে ক্যারিয়ার শুরু হয় তার। রেড ডেভিলস অধ্যায়ে ২০০৭-০৮ মৌসুমে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জেতেন তিনি। তবে পিকের সেরা সময়টা কেটেছে বার্সেলোনায়।

কাতালান ক্লাবটির হয়ে ৬০০টিরও বেশি ম্যাচ খেলেছেন এই ডিফেন্ডার। যেখানে তার সাফল্য ৩০টি শিরোপা। এরমধ্যে আছে আটটি লা লিগা, তিনটি চ্যাম্পিয়নস লিগ ও সাতটি কোপা ডেল রের শিরোপা। জাতীয় দল স্পেনের জার্সিতে তার শিরোপা তিনটি। দুটি ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ এবং একটি বিশ্বকাপ।

২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা বিপক্ষে স্বপ্নের বিশ্বকাপ জেতেন পিকে। এর আগে ও পরে টানা দুই আসরে স্বাদ পান ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের। ২০১৮ সালে লা রোজাদের বিদায় জানানোর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ১০২টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। তবে পিকের আন্তর্জাতিক ফুটবল অভিষেক স্পেনের জার্সিতে হয়নি।

২০০৮ সালে কাতালুনিয়া দলে অভিষেক হওয়ার পর ১০টি ম্যাচ খেলেন পিকে। পরের বছর স্পেন দলে জায়গা করে নেন তিনি। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপের পর আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানান এই ডিফেন্ডার। এবার ক্লাব ফুটবল থেকেও সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন তিনি।

খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টানা পিকে পরবর্তী পরিকল্পনা কী? কোচিং নয়, ফুটবল সংগঠক নাকি ফুটবলের বাইরে থেকে ব্যবসা করবেন তিনি। স্পেনের দ্বিতীয় সারির ক্লাব অ্যান্ডোরার মালিক পিকে। তিনি কসমস টেনিসের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশনের সঙ্গে পিকের প্রতিষ্ঠানের তিন বিলিয়ন যৌথ মালিকানার চুক্তি হয়।

২০১০ বিশ্বকাপের সময় শাকিরার সঙ্গে পরিচয় হয় পিকের। পরবর্তীতে পরিচয় থেকে প্রণয় ঘটে দুজনের মধ্যে। পিকে-শাকিরার ভালোবাসার ফসল হিসেবে দুটি পুত্র সন্তান আছে। বিচ্ছেদের পর থেকে বাচ্চারা শাকিরার সঙ্গেই আছেন। সংবাদমাধ্যমের গুঞ্জন শাকিরাকে ফেরানোর সবরকম চেষ্টাই করেছেন পিকে।