নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রের

বিশ্বকাপের প্রাচীন দলগুলোর একটি যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৩০ সালে টুর্নামেন্টের প্রথম আসরেই অংশ নিয়েছিল দলটি। ওই টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে খেলেছিল পশ্চিমা বিশ্বের দেশটি। যা বিশ্বমঞ্চে দেশটির ফুটবল ইতিহাসের সেরা সাফল্য। পরের আসরগুলোতে বাছাই পর্ব কিংবা নক আউট পর্ব কিংবা গ্রুপপর্বেই বারবার থেমেছে তাদের স্বপ্নযাত্রা।

ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের প্রাচীন দলগুলোর একটি যুক্তরাষ্ট্র

২০০২ বিশ্বকাপে অনেক দূর এগিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। শেষ পর্যন্ত জাপান-কোরিয়ার আসরে কোয়ার্টার ফাইনালে থেমে যায় দলটির স্বপ্নযাত্রা। গত বছর বিশ্বকাপের মূলপর্বের টিকিট পায়নি তারা। এবার ফেরাটা স্মরণীয় করে রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। দলটিতে তরুণ ও অভিজ্ঞ ফুটবলারদের দারুণ সমন্বয় করা হয়েছে। গ্রুপপর্বে তাদের সবচেয়ে বড় পরীক্ষাটা দিতে হবে ইংল্যান্ডের কাছে। তাদের অন্য দুই প্রতিপক্ষ ইরান ও ওয়েলস। তাদেরও হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। তবে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারলে নক আউট পর্বে ওঠার কথা যুক্তরাষ্ট্রের।

তারকা: যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান দলের সবচেয়ে বড় তারকা ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ। ২৪ বছর বয়সী এই ফরওয়ার্ড দলের আক্রমণ ভাগের মূল ভরসা। ক্লাব ফুটবলে ইউরোপ মাতানো পুলিসিচ আলাদভাবেই নজরে থাকবেন। এই মুহূর্তে জাতীয় দলে থাকা ফুটবলারদের মধ্যে তিনিই সর্বোচ্চ গোলদাতা। দেশের হয়ে ইতোমধ্যে ৫২ ম্যাচে ২১ গোল করেছেন পুলিসিচ। ২০১৬ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় তার। তার পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু হয় জার্মান ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের জার্সিতে। ২০১৯ সালে চেলসিতে যোগ দেন তিনি। ২০২১-২২ মৌসুমে পশ্চিম লন্ডনের ক্লাবটির উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ে মার্কিন এই স্ট্রাইকারের অবদান অসামান্য।

প্রধান কোচ: ক্লাব ফুটবলে ৮ বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে জাতীয় দল যুক্তরাষ্ট্রের ডাগ আউটে অভিষেক হয় গ্রেগ বারহাল্টারের। ২০০৮ সালে তার হাতে তুলে দেওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব। কোচ হিসেবে তাকে সফলই বলতে হবে। তার অধীনে ২০২১ সালে গোল্ড কাপ ও ২০২০ সালে নেশনস কাপের শিরোপা জিতেছিল যুক্তরাষ্ট্র। কাতার বিশ্বকাপের টিকিট কাটতেও তার কোচিং প্রশংসা কুড়িয়েছে। তাকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সেরা কোচই ভাবা হয়। মার্কিন ফুটবল দলকে যতো কোচ কোচিং করিয়েছেন এদের মধ্যে তার জয়ের হারই সবচেয়ে বেশি ৭৬.৬০ শতাংশ। জার্মান কোচ ইয়ুর্গেন ক্লিন্সম্যান চলে যাওয়ার পর ডাগ আউটে যে হাপিত্যেশ তৈরি হয়েছিল সেটা বারহাল্টারকে দিয়েই দূর করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

কিংবদন্তি: যুক্তরাষ্ট্রের কিংবদন্তিদের মধ্যে অন্যতম ল্যান্ডন ডনোভান। তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে কুড়ি বছর আগের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশের হয়ে ২০০০ সালে অভিষেক হয় তার। ২০১৪ সালে বিদায় জানান জাতীয় দলকে। এ সময়ে ১৫৭টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। যা দেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড। ক্লাইন্ট ডেম্পসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সর্বোচ্চ গোলদাতা ডনোভান। দুজনই গোল করেছেন ৫৭টি। অনেকেই ডনোভানের পর ডেম্বসেকেই জায়গা দিয়ে থাকেন। দেশের হয়ে ১৪১টি ম্যাচ খেলে ২০১৭ সালে অবসর নেন তিনি। তার অভিষেক হয় ২০০৪ সালে।

যুুক্তরাষ্ট্র:

ফিফা র‌্যাঙ্কিং: ১৬

গ্রুপ ‘বি’: ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, ওয়েলস

বিশ্বকাপ রেকর্ড:

১৯৩০: সেমিফাইনাল
১৯৩৪: শেষ ১৬
১৯৩৮: অংশ নেয়নি
১৯৫০: গ্রুপপর্ব
১৯৫৪-৮৬: বাছাই

১৯৯০: গ্রুপপর্ব
১৯৯৪: শেষ ১৬
১৯৯৮: গ্রুপপর্ব
২০০২: কোয়ার্টার ফাইনাল

২০০৬: গ্রুপপর্ব
২০১০-১৪: শেষ ১৬
২০১৮: বাছাই

গ্রুপপর্বের ম্যাচ:

২১ নভেম্বর: যুক্তরাষ্ট্র-ওয়েলস, রাত ১টা
২৫ নভেম্বর: ইংল্যান্ড-যুক্তরাষ্ট্র, রাত ১টা
২৯ নভেম্বর: যুক্তরাষ্ট্র-ইরান, রাত ১টা