দল পর্যালোচনা: সেনেগালকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন মানে

প্রতিটি বিশ্বকাপেই চমক হিসেবে কোনো না কোনো দলের হাজির হওয়াটা একটা নিয়ম হয়ে আছে। সেই ধারাবাহিকতায় ২০০২ জাপান-কোরিয়া আসরে আলোচনার ঝড় তুলেছিল সেনেগাল। উঠেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে। যা বিশ্বমঞ্চে তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য।

আসন্ন কাতার ফুটবল বিশ্বকাপে সাদিও মানের নেতৃত্বে চমক দেখাতে চায় আফ্রিকান জায়ান্ট সেনেগাল

ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, পরের তিনটি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের বাধাই আর উতরাতে পারেনি আফ্রিকার দলটি! গত আসর দিয়ে বড় মঞ্চে ফিরলেও প্রত্যাবর্তন রাঙাতে পারেনি সেনেগাল। বিদায় নিতে হয় গ্রুপপর্বেই। এবার কিছু একটা করতে মরিয়া দলটি।

সেনেগালের গ্রুপটা খুব একটা কঠিন নয়। দলটিকে সবচেয়ে বড় পরীক্ষা দিতে হবে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। গ্রুপের অন্য দুই দল স্বাগতিক কাতার ও ইকুয়েডর। দুটি দলকেই হারানোর সামর্থ্য রাখে আফ্রিকার দলটি। সব মিলিয়ে এবার নক আউট পর্বে ওঠার ভালো একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে সেনেগালের।

তারকা: সেনেগালের ফুটবল ইতিহাসে সাদিও মানেকেই এখন সবচেয়ে বড় কিংবদন্তি মনে করা হয়। দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৪টি গোল করেছেন বায়ার্ন মিউনিখ স্ট্রাইকার। তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের ওপর দাঁড়িয়ে আফ্রিকান নেশনস লিগের ট্রফি জেতে সেনেগাল। মানে জাদুতে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটি জায়গা করে নেয় বিশ্বকাপে।

এবার বিশ্বমঞ্চেও সেনেগালিজদের আশা-ভরসার প্রতীক হয়ে উঠেছেন মানে। কয়েক মৌসুম ধরে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন তিনি। পুরস্কার হিসেবে আফ্রিকান সেরা ফুটবলার হয়েছেন পরপর দুবার। এ বছর ব্যালন ডি’অরের লড়াইয়ে লিভারপুলের সাবেক স্ট্রাইকার হয়েছেন দ্বিতীয় সেরা।

প্রধান কোচ: সেনেগালের সেরা ফুটবলারদের ইতিহাসে আলিউ চিসের নামটা আছে। খেলোয়াড়ি জীবনে নিজেকে আগেই প্রমাণ করেছেন তিনি। পরবর্তীতে কোচ হিসেবেও নিজের জাত চেনান চিসে। গত বছর তার অধীনেই স্বপ্নের আফ্রিকান নেশনস লিগের ট্রফি জেতে সেনেগাল।

তার কোচিং নৈপুণ্যে এ বছর কাতার বিশ্বকাপের মূলপর্বে জায়গা করে নেয় সেনেগালিজরা। ২০১৫ সাল থেকে এই দলটিকে কোচিং করাচ্ছেন তিনি। দীর্ঘ সময় ধরে একটা নির্দিষ্ট দলকে কোচিং করানোর সুবিধাটা চিসে কাজে লাগিয়েছেন। মানে, কুলিবালি মেন্ডিদের এক সুতোয় বেঁধে রেখেছেন চিসে।

কিংবদন্তি: সেনেগালের কিংবদন্তিদের মধ্যে অন্যতম হেনরি চামারা। ১৯৯৯ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় তার। ২০০৮ সালে অবসর নেন তিনি। এ সময়ে দেশের হয়ে ৯৯টি ম্যাচ খেলেছেন চামারা। গোল করেছেন ২৯টি। সেনেগালের ফুটবল ইতিহাসে তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ গোলদাতা।

যদিও এ বছর তাকে ছাড়িয়ে যান সাদিও মানে। তবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটা এখনো চামারার দখলে আছে। তার এই রেকর্ডটাও নড়বড়ে হয়ে উঠেছে মানের কারণে। আর সাতটি ম্যাচ খেললেই পূর্বসূরি স্ট্রাইকারকে ছাড়িয়ে যাবেন মানে।

সেনেগাল:

গ্রুপ ‘এ’: কাতার, ইকুয়েডর, সেনেগাল, নেদারল্যান্ডস

ফিফা র‌্যাঙ্কিং: ১৮

বিশ্বকাপ রেকর্ড:

১৯৩০-১৯৬৬: ফ্রান্সের অন্তর্ভূক্ত
১৯৭০-১৯৮৬: বাছাইপর্ব
১৯৯০: অংশ নেয়নি
১৯৯৪-১৯৯৮: বাছাইপর্ব

২০০২: কোয়ার্টার ফাইনাল
২০০৬-১৪: বাছাইপর্ব
২০১৮: গ্রুপপর্ব

গ্রুপপর্বের ম্যাচ:

২১ নভেম্বর: সেনেগাল-নেদারল্যান্ডস; রাত ১০টা
২৫ নভেম্বর: কাতার-সেনেগাল; সন্ধ্যা ৭টা
২৯ নভেম্বর: ইকয়েডর-সেনেগাল; রাত ৯টা