মহানাটক: এবার পাকিস্তানকে হারাল জিম্বাবুয়ে

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের অঘটন মূলপর্বেও অব্যাহত রয়েছে। এবার হোঁচট খেল শিরোপা প্রত্যাশি পাকিস্তান। আজ বৃহস্পতিবার মহানাটুকে ম্যাচে পাকিস্তানকে এক রানে হারিয়ে দিল জিম্বাবুয়ে। সুপার টুয়েলভে পরপর দুই হারে কার্যত সুতোয় ঝুলে গেল বাবর আজমদের স্বপ্ন।

কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপে প্রথমবারের দেখাতেই পাকিস্তানকে হারিয়ে দিলো জিম্বাবুয়ে

পার্থে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ওভারে আট উইকেটে ১৩০ রানের পুঁজি তোলে জিম্বাবুয়ে। জবাবে আট উইকেটে ১২৯ রান তুলতে সক্ষম হয় পাকিস্তান। শেষ চার বলে চার রানের সহজ সমীকরণ মেলাতে পারেনি বাবরের দল। শেষ দুই বলে দুই উইকেট হারায় এশিয়ান জায়ান্টরা। শেষ বলে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হন শাহিন শাহ আফ্রিদি। এ নিয়ে পরপর দুই ম্যাচেই শেষ বলে হারল পাকিস্তান। প্রথম ম্যাচে তারা হারে ভারতের বিরুদ্ধে।

শেষ দুই ওভারে ২২ রানের সমকীরণ ছিল পাকিস্তানের সামনে। শেষ ওভারে যা নেমে আসে ১১ রানে। ২০তম ওভারের প্রথম দুলে সাত রান নিয়ে ফেলে পাকিস্তান। ম্যাচ চলে আসে হাতের মুঠোয়। অথচ সহজ ম্যাচটা অবিশ্বাস্যভাবে হেরে বসল দলটি। বাধভাঙা উচ্ছাসে মেতে ওঠে জিম্বাবুয়ে।

আফ্রিকান দলটির জয় এসেছে দলগত পারফরম্যান্সে। তবে ম্যাচ সেরার স্বীকৃতি উঠেছে সিকান্দার রাজার হাতে। ব্যাট নয়, বল হাতে এদিন অলো ছড়িয়েছেন তিনি। নিয়েছেন পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ তিন উইকেট। চাপে পড়ে পাকিস্তান। এই চাপেই শেষ হয়ে গেছেন বাবর অ্যান্ড কোং।

সহজ রান তাড়া করতে গিয়ে পাকিস্তান শুরুটা করে ধীরগতির। অষ্টম ওভারে ৩৬ রানে তিন উইকেট হারায় পাকিস্তান। চতুর্থ উইকেটে রাশ টেনে ধরেন শাদাব খান ও শান মাসুদ। জুটিতে ৫২ রান যোগ করে পাকিস্তান। কিন্তু উইকেট আগলে রাখতে গিয়ে আস্কিং রেটের চাপ পেয়ে বসে তাদের।

শাদাব-মাসুদ জুটি বিচ্ছিন্ন হতেই ফের ছন্দপতন হয় পাকিস্তানের ব্যাটিং অর্ডারের। জিম্বাবুয়েকে ব্রেক থ্রু এনে দেন সিকান্দার। ১৪ বলে ১৭ রানে ফেরেন শাদাব। তার সঙ্গী মাসুদকেও সাজঘরের পথ দেখান সিকান্দার। ৩৮ বলে ৪৪ রানে বিদায় নেন তিনে নামা মাসুদ।

শেষ দিকে মোহাম্মদ নওয়াজ ও মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র হার ঠেকাতে লড়াই শুরু করেন। ১৮ বলে ২২ রান তুলে বিদায় নেন নওয়াজ। ১৩ বলে ১২ রানে অপরাজিত থাকেন ওয়াসিম। এ ছাড়া ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ১৪ রানে আউট হন। বৃথাই গেছে তাদের সব প্রচেষ্টা।

চার ওভারে ২৫ রানে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন সিকান্দার। দুটি শিকার ব্রাড ইভান্সের। ব্লেসিং মুজারাবানি এক উইকেট পেলেও চার ওভারে মোটে ১৮ রান খরচ করেছেন। তাদের দারুণ বোলিং নৈপুণ্য আড়াল করে দেয় ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা।

এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংস বড় করতে পারেননি জিম্বাবুয়ের কোনো ব্যাটসম্যান। ২৮ বলে সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন সেন উইলিয়ামস। যা ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় হয়ে উঠল মহামূল্যবান। অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন ও ব্রাড ইভান্স সমান ১৯ রান করেন। এ ছাড়া ওয়েসলে মাধভেরে ১৭ এবং রায়ান বার্লের ব্যাট থেকে এসেছে ১০* রান।

ব্যাট হাতে আলো ছড়ানো ওয়াসিম বল হাতেও আগুন ঝরিয়েছেন। চার ওভারে ২৪ রানে চার উইকেট নিয়েছেন তিনি। ২৩ রানে তিনটি শিকার শাদাবের। হ্যারিস রউফ চার ওভারে মেডেনসহ ১২ রানে নিয়েছেন এক উইকেট। এই ত্রয়ীর সুবাদে লক্ষ্যমাত্রা নাগালেই রাখে পাকিস্তান। কিন্তু মন্থর উইকেটে ব্যাটারদের দায়িত্বহীনতা ডুবিয়েছে পাকিস্তানকে।

টি-টোয়েন্টি সংস্করণে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটা জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় জয়। গত বছর এপ্রিলে এই দলটাকে হারিয়েছিল আফ্রিকানরা। সব মিলিয়ে এবারের আরে এটা হলো পঞ্চম অঘটন। এর আগে বাছাইপর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হেরেছে দুই ম্যাচে। বাছাইপর্ব শুরু হয় নামিবিয়ার বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার হারে। সুপার টুয়েলভে ফেভারিট ইংল্যান্ড পা হড়কায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। এবার জিম্বাবুয়ের কাছে ধরাশায়ী হলো পাকিস্তান।