সমস্যা গুরুতর, উপায় খুঁজছেন গার্দিওলা

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের নক আউট পর্ব নিশ্চিত হয়েছে আগেই। তাতে অনেকটাই চাপমুক্ত পেপ গার্দিওলার দল। শেষ ষোলোর টিকিট হাতে নেওয়ার পর ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় প্রতিযোগিতায় দুই ম্যাচ খেলেছে সিটি। দুটো ম্যাচেই ড্র করেছে ইংলিশ জায়ান্টরা। আশার কথা হচ্ছে, দুই ম্যাচের একটিতেও গোল হজম করেনি সিটি।

ম্যানচেস্টার সিটির পেনাল্টি মিসের ‘রোগ’ নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রধান কোচ পেপ গার্দিওলা

হতাশার কথা হচ্ছে, দুই ম্যাচের একটিতেও গোল করতে পারেনি সিটি। ডেনমার্কের এফসি কোপেনহেগেনের পর মঙ্গলবার রাতে জার্মান ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছে তারা। দুটো ম্যাচেই জয়ের সুযোগ ছিল তাদের। কিন্তু সুযোগ পায়ে ঠেলেছে তারা।

সবচেয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য হচ্ছে, এই দুই ম্যাচ দিয়ে পুরোনো রোগে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। দুই ম্যাচেই পেনাল্টি পেয়ে তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে গার্দিওলার দল। সবশেষ ডর্টমুন্ড ম্যাচে স্পট কিক থেকে গোল করতে পারেননি দলটির আলজেরিয়ান ফরওয়ার্ড রিয়াদ মাহরেজ।

২০১৬ সালে গার্দিওলা ইতিহাদ চত্বরে আসার পর ৮০টি পেনাল্টির (পেনাল্টি শ্যুটআউট বাদে) ২৫টিই মিস করেছেন ম্যানচেস্টার সিটি খেলোয়াড়রা। যার বেশির ভাগই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে। মঙ্গলবার রাতে গার্দিওলা যেমনটি বলছিলেন, ‘আমি এখানে আসার পর এই পর্যন্ত ২৫টি পেনাল্টি মিস হয়েছে। যার বেশির ভাগই চ্যাম্পিয়নস লিগে।’

গ্রুপ সেরা দল হিসেবেই চ্যাম্পিয়নস লিগের নক আউট পর্বে উঠেছে সিটি। এই পর্বে ভুল করলে সেখান থেকে ফেরার সুযোগ খুব কমই থাকে। তাই শেষ ষোলোতে উঠেও শান্তিতে ঘুমাতে পারছেন না সিটি কোচ গার্দিওলা। দলের পেনাল্টি ‘রোগ’ নিয়ে উদ্বিগ্ন বার্সেলোনার প্রাক্তন কোচ।

গার্দিওলা বলেছেন, ‘(সংখ্যাটা) অনেক বেশি। আপনাকে সবসময় সাহসিকতার প্রশংসা করতে হবে। কিন্তু অনেক বেশি পেনাল্টি মিস করা একটা সমস্যা। আমাদের এই জায়গায় উন্নতি করতে হবে। এই ধরনের প্রতিযোগিতায় সূক্ষ্ণ বিষয়গুলো পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। আমাদের আরো সতর্ক হওয়া দরকার।’

চ্যাম্পিয়নস লিগে সিটির পেনাল্টি থেকে সাফল্যের হার ৭১ শতাংশ। গার্দিওলা আসার পর ১৭টির মধ্যে ১২টিতে গোল করতে পেরেছে সিটি। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে তো আরে বাজে অবস্থা। এখানে পেনাল্টিতে সাফল্য ৬৯ শতাংশ। ৫২টি স্পট কিক নিয়ে সিটি গোল করেছে ৩৬টিতে।

সাম্প্রতিককালে মাহরেজ অধিক পেনাল্টি মিস করছেন। স্পট কিক থেকে সবশেষ চারটি শট নিয়ে একটিতে গোল করতে পেরেছেন তিনি। যদিও আগের ১০টির নয়টিই কাজে লাগিয়েছেন আলজেরিয়ান সেনসেশন। তার মতো পেনাল্টিতে ৭১ শতাংশ সাফল্য আছে ক্লাবের সর্বোচ্চ গোলদাতা সার্জিও অ্যাগুয়েরোর।

আর্জেন্টিনার প্রাক্তন স্ট্রাইকার সিটি অধ্যায়ে ২৮টি পেনাল্টির ২০টিতেই গোল পেয়েছেন। মাহরেজ ১৪টির মধ্যে ১০টি। সিটির বেলজিয়ান মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনে নয়টি শটের সাতটিতেই পেয়েছেন জালের দেখা। সাবেক ফুটবলার ইয়া ইয়া তোরে তিনটি পেনাল্টির একটিও হাতছাড়া করেননি।

বর্তমান খেলোয়াড়দের মধ্যে আর্লিং হাল্যান্ড দুটি পেনাল্টি নিয়ে দুটিতেই গোল করেছেন। মাহরেজ, ডি ব্রুইনেরা পেনাল্টি মিস করায় চাপ বাড়তে পারে হাল্যান্ডের ওপর। দলের পরবর্তী স্পট কিক নিতে তাকেই হয়তো এগিয়ে আসতে হবে। কিন্তু নরওয়েজান স্ট্রাইকারও যে মাহরেজদের পদাঙ্ক অনুকরণ করবেন না সেটারই বা কী নিশ্চয়তা দেওয়া যায়!