ওই স্টেডিয়ামই ভেঙে ফেলবে ইন্দোনেশিয়া

এ মাসের প্রথম দিনে ইন্দোনেশিয়ার যে ফুটবল স্টেডিয়ামে পদদলিত হয়ে ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল, সেটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। পরে অবশ্য ফিফার সহযোগিতায় সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে স্টেডিয়ামটির পুনর্নিমাণ করা হবে। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর হিন্দুস্তানটাইমস।

কাঞ্জুরুহান স্টেডিয়ামে দর্শকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ব্যবহার করে

গত ১ অক্টোবর পূর্ব জাভার মালাং শহরে কাঞ্জুরুহান স্টেডিয়ামে ফুটবল ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিল আরেমা এফসি ও পার্সেবায়া সুরাবায়া। খেলা শেষে ফলাফল মনোপুত না হওয়ায় সমর্থকরা মাঠে নেমে এসে বিক্ষোভ জানাতে থাকে। পরে সেখানে মোতায়েন পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস ছোঁড়ে। এতে আতঙ্কিত হয়ে সবাই স্টেডিয়াম থেকে বের হতে চাইলে পদদলিত হয়ে ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়, তাদের মধ্যে ৪০ জনের বেশি শিশু ছিল।

৪২ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার কাঞ্জুরুহান স্টেডিয়ামটি যাত্রা শুরু করেছিল ২০০৪ সালে। এ স্টেডিয়ামের গেটগুলো এতটাই সংকীর্ণ ছিল যে, একই সময়ে দুইজনের বেশি লোক ঢুকতে বা বের হতে পারতো না। ওই দিনের দুর্ঘটনার সময় বেশ কিছু গেটও বন্ধ ছিল। ওই ঘটনার জন্য তিনজন পুলিশ সদস্যসহ ছয়জনকে দোষী ব্যস্ত করেছে। ওই ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত সমস্ত ফুটবল ম্যাচ বন্ধ রাখা হয়েছে এবং সমস্ত স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা পর্যালোচনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফিফা এবং এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) প্রতিনিধিরা ঘটনা তদন্তে গত সপ্তাহ থেকে জাকার্তায় অবস্থান করছেন।

জোকো উইদোদো এবং জিয়ান্নি ইনফান্তিনো

ফিফার সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো ওই ঘটনার দুই সপ্তাহ পর ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় উইদোদোর সাথে সাক্ষাৎ করেন। সে সময় তিনি ওই দিনটিকে ফুটবলের জন্য অন্যতম অন্ধকারতম দিন হিসেবে আখ্যা দেন। পরে তিনি ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টকে দেশের ক্রীড়াকে সংস্কার ও রূপান্তর করতে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

উইদোদো সাংবাদিকদের বলেন, আমরা প্রথমে মালাংয়ের কাঞ্জুরুহান স্টেডিয়ামটিকে ভেঙে ফেলব এবং পরে ফিফার মান অনুযায়ী এবং তাদের সহায়তায় এটি পুনর্নির্মাণ করব। নতুন স্টেডিয়ামে খেলোয়াড় ও সমর্থক উভয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

জিয়ান্নি ইনফান্তিনো তার বক্তব্যে বলেন, আমি ইন্দোনেশিয়ার সমস্ত জনগণকে গ্যারান্টি দিচ্ছি, ফিফা এখানে আপনার সাথে আছে এবং থাকবে। ফিফা এখানে সরকার, এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) এবং ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল ফেডারেশনের সাথে ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বে কাজ করতে এসেছে।

আগামী বছর অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ ফুটবল অনুষ্ঠিত হবে। এর স্বাগতিক দেশ হিসেবে থাকবে ইন্দোনেশিয়া। এ অবস্থায় দেশটির প্রথম ফোকাস হিসেবে থাকছে স্টেডিয়াম অপারেশন, সমর্থকদের আচরণের উন্নতি এবং স্কুলে ফুটবলের জন্য প্রোগ্রাম তৈরি করা। উইদোদো বলেন, বিভিন্ন পর্যায়ে আমরা বিশেষজ্ঞদের আনব, বিনিয়োগ করব এবং আমরা নিশ্চিত করব যে ইন্দোনেশিয়া বিশ্ব ফুটবলের মঞ্চে উজ্জ্বল অবস্থান রাখবে।