ইনজামাম: আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগছেন কোহলি

একটা সময় বর্তমান বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা চার ব্যাটারের লড়াইয়ে প্রথম দিকেই ছিলেন বিরাট কোহলি। সময়ের বিবর্তনে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন তিনি। যার প্রধান কারণ ফর্মহীনতা। তাকে পেছনে ফেলেছেন বাবর আজম, স্টিভ স্মিথ, জো রুট, কেন উইলিয়ামসনরা। কোহলির দীর্ঘদিন রানে না থাকা নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক ও কিংবদন্তি ব্যাটার ইনজামাম উল হক। তার মতে, দীর্ঘদিন ধরে বড় রান না পাওয়ায় কোহলির আত্মবিশ্বাস কমেছে; চিড় ধরেছে তার মনোবলে। আর এই আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভোগার কারণেই ফর্মে ফিরতে দেরি হচ্ছে ভারতের সাবেক অধিনায়কের।

বিরাট কোহলি

এশিয়া কাপে ইতোমধ্যেই মঞ্চস্থ হয়েছে ভারত-পাকিস্তান মহারণ। হাইভোল্টেজ ম্যাচটিতে কোহলি কিছুটা ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিলেও বেশি দূর এগোতে পারেননি। ৩৫ রানে আউট হয়ে যান। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নামার আগে এক সাক্ষাৎকারে নিজের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অকপট কথা বলেছিলেন কোহলি। লাগাতার খারাপ ফর্মে থাকাটাই কাল হয়েছে তার। ধাক্কা খেয়েছে তার আত্মবিশ্বাস। তা জানাতে এতটুকু দ্বিধাবোধ করেননি তিনি। মাঠে জোর করে আগ্রাসন দেখাতে হয়েছিল সেকথাও স্বীকার করেছেন কোহলি। মনের অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে, মাসখানেক বিশ্রামে থাকার সময়টাতে নিজের প্রিয় ব্যাটটা পর্যন্ত ছুঁয়েই দেখেননি তিনি!

আগ্রাসী কোহলির মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। এ নিয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ইঞ্জি বলেছেন, ‘কোহলি ভীষণ চাপের মধ্যে আছে। ম্যাচে সেটা ওকে দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। সাধারণত উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া ব্যাটারকে আউট করা কঠিন হয়। তবে ম্যাচে ত্রিশের বেশি রান করার পরও কোহলির মধ্যে সেই আত্মবিশ্বাস দেখা যায়নি। যা সাধারণত আমরা সেট হয়ে যাওয়া ব্যাটারের মধ্যে দেখে থাকি। ওর মতো বিশ্বমানের ব্যাটারকে এভাবে দেখে আমি খুব অবাক হয়েছি।

দীর্ঘ সাড়ে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্রিকেটের তিন ফরমেটের কোনোটিতেই শতরান নেই কোহলির। শেষবার তিনি তিন অংকের দেখা পেয়েছিলেন ২০১৯ সালে ইডেন গার্ডেন্সে; বাংলাদেশের বিপক্ষে গোলাপি বলের টেস্টে।

মহারণে কিপার-ব্যাটার ঋষভ পন্তকে বসিয়ে দিনেশ কার্তিককে সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তে অখুশি হয়েছেন ইনজামাম। রীতিমতো প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টকে। তিনি বলেন, ‘ভারতের মিডল এবং লোয়ার অর্ডার বেশ মজবুত। আর এই জায়গাতেই এশিয়া কাপের বাকি দলগুলোর চেয়ে ভারত আলাদা। ঋষভকে বাইরে বসে থাকতে দেখে অবাক হয়েছিন। ঋভষ, (হার্দিক) পান্ডিয়া এবং (রবিন্দ্র) জাদেজা ত্রয়ী বিপজ্জনক যে কোনো দলের জন্য। এই উইকেটে ১১ রান করাও মুশকিল। অথচ ওরা কী সুন্দর সামাল দিলো ব্যাপারটা।’

দুবাইতে নাটুকে ম্যাচে ৫ উইকেটে হারের পর পাকিস্তানের ভুলগুলো তুলে ধরেছেন ইনজামাম। নির্বাচক কমিটি ও টিম ম্যানেজমেন্টের মিডল অর্ডার নিয়ে তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। ইনজির মতে, ব্যাটিং অর্ডারের চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে স্পেশালিস্ট ব্যাটার প্রয়োজন। না হলে ভুগতে হবে পাকিস্তানকে। কারণ সামনেই রয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তার আগে এই এশিয়া কাপের মঞ্চেই দলকে সেট করে নিতে না পারলে সমস্যায় পড়তে হবে বাবর বাহিনীকে। শাহিন শাহ আফ্রিদির দ্রুত সেরে ওঠাও খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন ইনজামাম।