শুরুতেই বাংলাদেশের অগ্নিপরীক্ষা

এমনিতেই টি-টোয়েন্টি সংস্করণে বাংলাদেশের অবস্থা হ য ব র ল। বিদেশের মাটিতে তো একেবারেই নাজুক অবস্থা। তার ওপর সংযুক্ত আরব আমি রাতে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে পাঁচ ম্যাচ খেলে সবকটিতেই হার। সাকিব আল হাসানদের আত্মবিশ্বাস তলানিতে পৌঁছে দিতে এই তিনটি তথ্যই যথেষ্ট। আর সব তথ্য বাদই দেওয়া গেল।

বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান ক্রিকেট দল

বাংলাদেশ আশা দেখতে পারে অতীতের দিকে তাকালে। সবশেষ চার আসরের তিনটিতেই ফাইনাল খেলেছে টাইগাররা। একটু এদিক-সেদিক হলে দুটো শিরোপা জিততেও পারতো লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। অথচ সেই দলটার এবার সুপার ফোরে ওঠা নিয়েই জেগেছে প্রবল সংশয়। তাও আবার বাংলাদেশের গ্রুপে নেই ভারত কিংবা পাকিস্তান।

গ্রুপপর্বে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সাকিব অ্যান্ড কোং পেয়েছেন শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানকে। দ্বিতীয় দলটির বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে এবারের এশিয়া কাপ শুরু করবে বাংলাদেশ। রাত আটটায় শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি। সবশেষ গত বছর এই ভেন্যুতে দুটি ম্যাচে জয়ের খুব কাছে গিয়ে হেরেছে দল।

বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান

বাংলাদেশ যেখানে টি-টোয়েন্টিতে আরব আমিরাতে জয়শূন্য, সেখানে আফগানদের ৩৯ ম্যাচের ২৯টি জয় এসেছে এখান থেকেই! কেবল চিরচেনা হয়ে ওঠা ভেন্যুর কারণেই নয়, গত কয়েক বছর ধরে সাদা বলের ক্রিকেটে দুর্দান্ত খেলছে যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তান। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে তো বাংলাদেশের চেয়েও অনেক এগিয়ে গেছে তারা।

মুখোমুখি নয়বারের লড়াইয়ে আফগানদের কাছে টাইগাররা হেরেছে পাঁচ ম্যাচে। জয় মোটে তিনটিতে। একটি ম্যাচ অবশ্য আলোর মুখ দেখেনি। খেয়ে নিয়েছে বৃষ্টি। শারজাহতে অমন আশঙ্কা নেই। এই দেশে ক্রিকেটারদের যা ভোগান্তি তা হচ্ছে তীব্র দাবদাহ। প্রচণ্ড গরমে খেলোয়াড়দের প্রায়শই নাভিশ্বাস উঠে যায়। তবে আফগানদের ‘অভ্যাস’ হয়ে গেছে এখানে খেলতে খেলতে।

এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে গুঁড়িয়ে দিয়ে আট উইকেটে জিতেছে আফগানিস্তান। উপরন্তু আলোচনা বিশ্লেষণ করলে আফগানদের এই জয়টাকে অবশ্য অঘটন বলাকে অন্যায্য হবে। বাস্তবতা হচ্ছে লঙ্কানদের ক্রিকেট যতটা অস্তাচলে যাচ্ছে ততটাই উদয় হচ্ছে আফগান ক্রিকেট। দলটিতে কী নেই! একেবারেই স্বয়ংসম্পূর্ণ।

লড়াইয়ের মঞ্চ শারজাহর উইকেট অবশ্য এমনিতেই একটু ধীরগতির এবং স্পিনারদের বাড়তি সুবিধা দিয়ে থাকে। বাংলাদেশের ভয়টা এখানেই। কারণ আফগান শিবিরে আছেন রশিদ খান, মুজিব উর রহমান ও মোহাম্মদ নাবির মতো স্পিনাররা। দলের পেস বিভাগও শক্তিশালী। টি-টোয়েন্টির আদর্শ তথা কয়েকজন পাওয়ার হিটারও আছে তাদের।

সেই তুলনায় বাংলাদেশ দলটায় শক্তিমত্তায় কিছুটা দুর্বল। এই বছরের বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান চোট নিয়ে ছিটকে গেছেন টুর্নামেন্ট থেকে। নুরুল হাসান সোহানেরও পরিণতি একই। আশার প্রদীপ হয়ে টিকে আছেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। দুদিন আগেই যাকে সাকিবের ডেপুটি করা হয়েছে। বাংলাদেশের সমর্থকরা মূলত স্বপ্ন দেখছে এই দুজনকে ঘিরেই!
আজ জিতলে সরাসরি সুপার ফোরে চলে যাবে আফগানিস্তান। সেক্ষেত্রে সুতোয় ঝুলে যাবে বাংলাদেশের ভাগ্য। শ্রীলঙ্কা ম্যাচ তখন বাঁচা-মরার প্রেক্ষাপট হয়ে সামনে আসবে। অমন কঠিন অবস্থায় যেতে চায় না টাইগাররা। জয় দিয়েই মিশন শুরু করতে মরিয়া সাকিবরা। কাজটা সহজ হওয়ার কথা নয়। স্থান, কাল, পাত্র তথা সবদিক থেকেই যে এগিয়ে আছে আফগানরা!