রাজত্ব উদ্ধারের মিশন পাকিস্তানের

পাকিস্তানকে বলা অনুনমেয়। যে কোনো টুর্নামেন্টে তাদের ফেভারিট ভাবা যেমন কঠিন তেমনি তাদের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়াও সহজ নয়। যথারীতি এবারের এশিয়া কাপেও এমন একটা অবস্থান নিয়ে মিশন শুরু করতে যাচ্ছে দলটি। দল হিসেবে যথেষ্ট ভারসাম্য আছে পাকিস্তানের। তাদের সুপার ফোরে যাওয়া নিয়ে কোনো সংশয় নেই বললেই চলে। কারণ ভারত ছাড়াও পাকিস্তানের গ্রুপে আছে হংকং। খর্বশক্তির দলটিকে হারালেই শেষ চারে উঠতে পারবে তারা। তা ভারতের বিপক্ষে মহারণে যাই-ই হোক না কেন। যদিও পাকিস্তানের লক্ষ্য সুপার ফোর নয়, তাদের চোখ তৃতীয় শিরোপা। আজ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে স্বপ্নযাত্রা শুরু করবে পাকিস্তান।

পাকিস্তান ক্রিকেট দল

শক্তির উৎস: যে কোনো টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের শক্তির মূল উৎস হয়ে থাকে বোলিং বিভাগ। বিশেষ করে পেস আক্রমণ। কিন্তু এবার ব্যাটিংয়ের মতো ততটা শক্তিশালী হয়নি তাদের পেস বোলিং বিভাগ। তাই পাকিস্তানের মূল শক্তি ব্যাটিং বিভাগ। দারুণ ছন্দে আছেন দলটির টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা। বাবর আজম, ফখর জামান, মোহাম্মদ রিজওয়ানরা। দলে আছেন শাদাব খান, মোহাম্মদ নওয়াজের মতো বিশ্বমানের স্পিনাররা। এদের যে কেউ একার হাতে ঘুরিয়ে দিতে পারেন ম্যাচের মোড়।

দুর্বলতার জায়গা: ব্যাটিংয়ের মতো পাকিস্তানের বোলিংটা এবার ততটা সমৃদ্ধ নয়। নেপথ্য কারণ দলের সেরা পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির ইনজুরি। হাঁটুর চোট নিয়ে অন্তত এক মাস মাঠের বাইরে ছিটকে গেছেন তিনি। তবে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতেই আছেন এই পেসার। সতীর্থদের সঙ্গে থেকে তাদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করছেন তিনি। তার পরিবর্তিত হিসেবে কয়েকজন অভিজ্ঞ পেসারের নাম শোনা গেলেও মোহম্মদ হাসনাইনকে নিয়েছে পাকিস্তান।

বাবর আজমের উল্লাস

যিনি ত্রুটি পূর্ণ বোলিং অ্যাকশনের কারণে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। ত্রুটি শুধরে নেওয়ার পর গত জুনে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে। ১৮টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলা হাসনাইন কিছুদিন আগে খেলেছেন বিগ ব্যাশে। সেখানেও তার অ্যাকশন নিয়ে আবার প্রশ্ন উঠেছে। আফ্রিদির বদলে হাসান আলিকে না নেওয়াটা ছিল পাকিস্তান দলে সবচেয়ে বড় চমক। হাসানকে না নিয়ে নাসিম শাহকে বেছে নিয়েছে । এবারের এশিয়া কাপে সাদা বলের ক্রিকেটে অভিষেক হতে পারে তার। অনভিজ্ঞ এই পেস আক্রমণই পাকিস্তানের দুর্বলতার জায়গা। হাসানাইনের টি-টোয়েন্টিতে এবং নাসিমের টেস্ট সংস্করণে হ্যাটট্রিক আছে।

অভিজ্ঞতা ও র‌্যাঙ্কিং: অনেক দিন ধরেই টি-টোয়েন্টি সংস্করণে ধারাবাহিক পারফর্ম করছে পাকিস্তান। এর প্রভাব পড়েছে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে র‌্যাঙ্কিংয়ে আপাতত তিনে আছে তারা। অভিজ্ঞতাতেও বেশ সমৃদ্ধ পাকিস্তান। এটা হতে যাচ্ছে তাদের ১৩তম এশিয়া কাপ। কিন্তু অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন তারা সেই অর্থে করতে পারেনি। মাত্র দুবার শিরোপা জিতেছে তারা। সবশেষ ২০১২ সালে মুকুট জিতেছিল পাকিস্তান। এরপর ২০১৪ সালেও ফাইনাল খেলেছিল তারা। তবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে যায় পাকবাহিনী। এবার হারানো রাজত্ব উদ্ধারে মরিয়া হয়ে মাঠে নামবে তারা।

বড় তারকা: পাকিস্তান দলের সবচেয়ে বড় তারকা তাদের অধিনায়ক বাবর আজম। ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি দুই সংস্করণেই দারুণ ছন্দে আছেন তিনি। পাকিস্তানি সমর্থকরা তার ব্যাটের দিকেই তাকিয়ে থাকবেন। এই মুহূর্তে টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটারদের র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে আছেন বাবর। ব্যাট হাতে ভালো সময় কাটছে তার সতীর্থ মোহাম্মদ রিজওয়ানেরও। র‌্যাঙ্কিংয়ে সেরা দশে আছেন এই দুজন।

ম্যাচ সূচি:
২৮/২৮/২০২২: পাকিস্তান-ভারত দুবাই, সরাসরি রাত ৮টা।
০২/০৯/২০২২: পাকিস্তান-হংকং, শারজাহ, সরাসরি রাত ৮টা।

পাকিস্তান দল: বাবর আজম (অধিনায়ক), শাদাব খান, আসিফ আলি, ফখর জামান, হারিস রউফ, হায়দার আলি, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ হারিস, মোহাম্মদ নওয়াজ, মোহাম্মদ রিজওয়ান, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, নাসিম শাহ, ইফতিখার আহমেদ, শাহিন শাহ আফ্রিদি, শাহনেওয়াজ দাহানি, উসমান কাদির।