দল পর্যালোচনা: শ্রীলঙ্কার সুদিন ফেরানোর মিশন

বেশ কয়েকজন কিংবদন্তির অবসরে বিপর্যয় নেমে এসেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলে। ধঁকল সামলে উঠতে গত কয়েক বছর ধরেই নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে দলটি। আজ থেকে শুরু হওয়া এশিয়া কাপ লঙ্কানদের ফেরার জন্য উপযুক্ত মঞ্চ হতে পারতো। প্রতিযোগিতার স্বাগতিক হওয়ার বাড়তি সুবধিাও পেয়েছিল দীপরাষ্ট্রের দেশটি। কিন্তু দেশটিতে অর্থনৈতিক মন্দা ও তীব্র গণআন্দোলনের মুখে সরে যায় টুর্নামেন্টের ভেন্যু। সংযুক্ত আরব আমিরাতেই তাই টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট। যে কারণে পরিচিত দর্শকদের সামনে খেলার যে বাড়তি আত্মবিশ্বাস সেটা পাচ্ছে না তারা।

 দল পর্যালোচনা: শ্রীলঙ্কার সুদিন ফেরানোর মিশন

শক্তির উৎস: শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় শক্তি দলটির স্পিন ও অলরাউন্ডার বিভাগ। নির্দিষ্ট কিছু ক্রিকেটারের সাম্প্রতিক ফর্মও আশা জাগাচ্ছে শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে। দলটির নেতৃত্বে এসেছেন দাসুন সানাকা। ব্যাট হাতে স্বপ্নের ফর্মে আছেন তিনি। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান করছেন কুশল মেন্ডিস। দুই সতীর্থের এই দ্বৈরথ দলের জন্য বাড়তি সুবিধা। বোলিংয়ে স্পিন জাদু দেখিয়েই চলেছেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ধনঞ্জয়া ডি সিলভা নিয়মিত অলরাউন্ড পারফর্ম করছেন। ব্যাট কিংবা বল হাতে একাই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেওয়ার যোগ্যতা আছে তার।

দুর্বলতার জায়গা: গত কয়েক বছরে শ্রীলঙ্কার পারফরম্যান্স আত্মবিশ্বাস তলানিতে নিয়ে গেছে। মাঝেমধ্যে একটু চমক দেখালেও ছন্দটা ধরে রাখতে পারছে না শ্রীলঙ্কা। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে তো রীতিমতো নাজুক অবস্থা তাদের। ২০২০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এই ফরমেটে মাত্র একটি সিরিজ জিতেছে লঙ্কানরা। সবশেষ ১১ ম্যাচের নয়টিতেই হেরেছে দলটি। এর মধ্যে শেষ পাঁচ ম্যাচেই হার চারটিতে।

এবারের এশিয়া কাপ শুরুর আগে লঙ্কানদের সবচেয়ে দুশ্চিন্তার নাম দলীয় ফর্ম। তাদের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে দুস্মন্ত চামিরার ইনজুরি। চোট নিয়ে এশিয়া কাপ থেকেই ছিটকে গেছে তারা। এতে করে লঙ্কানদের পেস বিভাগের শক্তি অনেকটাই কমে গেছে। তাদের পেস আক্রমণে আসা দিলশান মদুশঙ্কা ও মাথিশা পাথিরানা দুজনের জন্য। এটোই প্রথম কোনো বড় টুর্নামেন্ট। অনভিজ্ঞ পেস অক্রমণ ভোগাতে পারে লঙ্কানদের। টি-টোয়েন্টির দল গোছাতে না পারা দলটা টেস্ট সংস্করণ থেকেও ক্রিকেটার নিয়েছে। এই যেমন লাল বলের ক্রিকেটে রানের বান ছুটিয়ে ডিনেশ চান্দিমালকে নিয়েছে তারা।

অভিজ্ঞতা ও র‌্যাঙ্কিং: এশিয়া কাপের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দল শ্রীলঙ্কা। এটা হতে যাচ্ছে দলটির ১৪তম আসর। ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ তাদের চেয়ে একটি আসর কম খেলেছে। তবে টুর্নামেন্টে অভিজ্ঞতার মূল্য চুকিয়েছে শ্রীলঙ্কা। প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় সফল দল তারা। এ পর্যন্ত পাঁচবার শিরোপা জিতেছে দলটি। দুটি বেশি আছে ভারতের। শেষবার ২০১৪ সালে প্রথমবার যখন টি-টোয়েন্টি সংস্করণের এশিয়া কাপ হয়েছিল সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। এরপর আর ফাইনালে উঠতে পারেনি তারা। এবারো টুর্নামেন্টের ফেভারিট নয় তারা। কার্যত টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে আট নম্বরে আছে।

বড় তারকা: শ্রীলঙ্কা দলে নির্দিষ্ট বড় কোনো তারকা নেই। তবে মাঝারি সারির এক ঝাঁক তারকার উপস্থিতি আছে দলটিতে। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, কুশল মেন্ডিস, দাসুন সানাকা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা- নির্দিষ্ট কোনো ম্যাচে দিনটা হতে পারে যে কারোর। এটা অবশ্য দলের জন্য ইতিবাচক ব্যাপারই।

ম্যাচ সূচি: ২৭/০৮/২০২২: শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, শারজাহ, সরাসরি রাত ৮টা।
০১/০৯/২০২২: শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ, দুবাই, সরাসরি রাত ৮টা।

শ্রীলঙ্কা দল: দাসুন সানাকা (অধিনায়ক), দানুসকা গুনাথিলাকা, পাথুম নিসাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, চারিথা আসালাঙ্কা, ভানুকা রাজাপাকশে, আসেন বান্ডারা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মহেশ থিকসানা, জেফরি ভান্ডার্সে, প্রবীন জয়াবিক্রমা, দুস্মন্ত চামিরা, বিনুরা ফার্নান্দো, চামিকা করুনারত্নে, দিলশান মধুশঙ্ক, মাথিশা পাথিরানা, ডিনেশ চান্দিমাল, নুয়ান্দু ফার্নান্দো, কাসুন রাজিথা।