৬১৩ রানের ম্যাচে ভারতের নাটুকে জয়

বিশ্রামে পাঠানো হয়েছে নিয়মিত অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে। ওয়ানডে সিরিজে নেই বিরাট কোহলিও। বিশ্রামে আছেন আরও কয়েকজন তারকা। তবু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল ভারত। টপ অর্ডারের দৃঢ়তায় প্রথমে রানের পাহাড় গড়ে সফরকারীরা। রান তাড়ায় জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু শেষ দিকে কঠিন সমীকরণ মেলাতে পারেনি ক্যারিবীয়রা।

শেষ দিকে কঠিন সমীকরণ মেলাতে পারেনি ক্যারিবীয়রা

শনিবার রাতে ত্রিনিদাতে নাটকীয় ম্যাচে ভারত জিতল তিন রানে। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সাত উইকেটে ৩০৮ রানের শক্তিশালী সংগ্রহ তোলে ভারত। জবাবে ছয় উইকেটে ৩০৫ রান তুলতে সক্ষম হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেঞ্চুরি হাতছাড়া করা ভারতের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান হয়েছেন ম্যাচ সেরা। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল ভারত। রোববার একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ম্যাচ।

শেষ তিন ওভারে ৩৮ রানের কঠিন সমীকরণ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে। ক্যারিবীয়রা তুলতে পারল ৩৪ রান। শেষ ওভারে ১৪ রান প্রয়োজন হলেও ১১ রান তুলতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা। অথচ একটা সময় জয়ের সম্ভাবনা ভালোভাবেই জাগিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৪তম ওভারে এক উইকেটে ১৩৮ রান ছিল তাদের। কিন্তু ছন্দটা ধরে রাখাতে পারেনি স্বাগতিক শিবির।

তবে জয়ের আশা কখনোই ছাড়েনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। লড়াই চালিয়ে যান ক্যারিবীয় মিডল ও লোয়ার অর্ডারের ব্যাটাররা। শেষ অবধি তা বৃথাই গেছে। রান তাড়ায় শুরুর ধাক্কাও কাটিয়ে উঠেছিল স্বাগতিকরা। ৩০৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ১৬ রানে তারা হারায় ওপেনার শাই হোপকে (৭)। পরে কাইল মেয়ার্স ও শামারাহ ব্রুকসের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ধাক্কা সামলে ওঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

দুজনই বিদায় নেন কয়েক মিনিটের ব্যবধানে। ১১৭ রানের জুটি ভাঙে ব্রুকসের বিদায়ে। ৬১ বলে ৪১ রানে আউট হন তিনি। ৬৮ বলে ৭৪ রানে বিদায় নেন মেয়ার্স। টপ অর্ডারের দুই ব্যাটারকে ফিরিয়েও ঠিক স্বস্তি পাচ্ছিল না ভারত। উইকেটে জমে যান নতুন দুই ব্যাটার ব্রেন্ডন কিংস ও অধিনায়ক নিকোলাস পুরান। দুশর আগে পুরান ও রভম্যান পাওয়েলকে ফিরিয়ে ম্যাচের লাগাম টানে ভারত।

দলীয় সংগ্রহ আড়াই শ’ ছাড়ানোর পর আউট হন কিং। ৬৬ বলে ৫৪ রান করেন তিনি। তার সঙ্গী ২৬ বলে ২৫ রান করে বিদায় নিয়েছেন আগেই। দুজনের আসা-যাওয়ার ফাঁকে ছয় রান করেন পাওয়েল। পরাজয় চোখ রাঙালেও হারার আগে হারল না ক্যারিবীয়রা। লোয়ার অর্ডারের আকিল হোসেন ও রোমারিও শেফার্ড লড়াই চালিয়ে গেলেন শেষ বল অবধি। তাদের আর ফেরাতে পারেনি ভারত।

আকিল ৩২ বলে ৩২ এবং শেফার্ড ২৫ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন। শেষ বলে বাউন্ডারি মারতে পারলে অবশ্য ম্যাচ গড়াতো সুপার ওভারে। কিন্তু মোহাম্মদ সিরাজের বলে লেগ বাইতে সিঙ্গেল নেন আকিল-শেফার্ড। তবে হারলেও তারা যেভাবে লড়াই করেছেন তা পিঠ চাপড়ে দেওয়ার মতো। ক্যারিবীয়দের পতন হওয়া ছয় উইকেটের দুটি করে নিয়েছেন সিরাজ, শার্দুল ঠাকুর ও যুভেন্দ্র চাহাল।

এর আগে ব্যাট হাতে দারুণ সূচনা করে ভারত। উদ্বোধনী জুটিতে দলীয় শতক ছাড়ায় তারা। জুটি গড়ার পথে দুই ওপেনার ধাওয়ান এবং শুভমান গিল তুলে নেন ব্যক্তিগত ফিফটি। ১১৯ রানের জুটি বিচ্ছিন্ন হয় গিল ৫৩ বলে ৬৪ রানে বিদায় নিলে। পরে শ্রেয়াস আইয়ারকে নিয়ে ৯৪ রানের আরেকটি কার্যকর জুটি গড়েন ধাওয়ান। ৯৯ বলে ৯৭ রানে আউট হন ভারতীয় অধিনায়ক।

৫৭ বলে ৫৪ রান এসেছে শ্রেয়াসের ব্যাট থেকে। টপ অর্ডারের এই তিন ব্যাটারের সুবাদেই মূলত তিন শ’ ছাড়িয়েছে ভারত। এ ছাড়া সূর্যকুমার যাদব ১৩, সঞ্জু স্যামসন ১২, দীপক হুদা ২৭ এবং অক্ষর প্যাটেল ২১ রানে আউট হন। ক্যারিবীয়দের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন আলজারি জোসেফ ও গুডাকেশ মোতি। একটি করে শিকার শেফার্ড ও আকিলের।