গায়ানা যেন মিরপুরের ‘যমজ’ ভাই, বাংলাদেশের সিরিজ জয়

গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামের উইকেটের মন্থরতা, স্পিন সখ্যতা নতুন নয়। ২২ গজে বাংলাদেশের বোলারদের দাপট চলাকালীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রসিকতা করতেও ছাড়েননি অনেকে। এক দর্শক লিখেছেন, গায়ানা-গামিনির মধ্যে খুব বেশি অমিল নেই। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের প্রধান কিউরেটর গামিনি ডি সিলভার বানানো উইকেটের দারুণ মিল গায়ানার।

গায়ানা যেন মিরপুরের ‘যমজ’ ভাই, বাংলাদেশের সিরিজ জয়

১৫ হাজার কিলোমিটার দূরের গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামের উইকেটকে শরেবাংলার ‘যমজ’ ভাই বলে অনায়সে চালিয়ে দেওয়া যাবে। লো বাউন্স, স্পিন সহায়ক গায়ানার উইকেট দুই হাত ভরেই দিয়েছে বাংলাদেশ দলকে। ক্যারিবিয়ানে আসার পর টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে নতজানু হয়ে থাকা টাইগাররাই ওয়ানডেতে দাপট দেখালো। টানা দুই ম্যাচে পাত্তাই পেল না ক্যারিবিয়ানরা।

এক ম্যাচ হাতে রেখেই ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার রাতে গায়ানায় সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নাসুম আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণি জাদুতে নাকাল হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ম্যাচটা ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ দল। একই ভেন্যুতে আগামী ১৬ জুলাই সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।

এ জয়ের মধ্য দিয়ে ওয়ানডেতে টানা ১০ ম্যাচে উইন্ডিজদের হারানোর গৌরব অর্জন করল বাংলাদেশ। এ ফরম্যাটে ৩১তম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ এবং টানা পঞ্চম সিরিজ জিতল টাইগাররা।

জয়ের পর বেজায় খুশি অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তার মতে, হতাশায় মুষড়ে পড়া ড্রেসিংরুমে প্রাণ ফিরিয়েছে ওয়ানডে সিরিজ, ‘সিরিজের শুরুতে আমি বলেছিলাম, এটা সেই ফরম্যাট যা নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি। আমরা অতীতেও ভালো পারফর্ম করেছি। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির পর ড্রেসিংরুমে স্বস্তি ছিল না। তবে সবাই জিততে মুখিয়ে ছিল। জয়টা দারুণ অনুভূতির কিন্তু এখনও উন্নতির অনেক জায়গা আছে।’

আগামী বছর ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপকে পাখির চোখ করছেন তামিম, ‘লক্ষ্য আগামী বছরের পরবর্তী বিশ্বকাপ।’

সাকিব আল হাসান না থাকায় বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে নাসুম আহমেদকে খেলিয়েছে বাংলাদেশ। তাইজুলকে বসিয়ে রেখে নাসুমকে খেলানোর সুফলও পাওয়া গেছে। ম্যাচে ১০ ওভারে ৪ মেডেনসহ ১৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন এ তরুণ।

তার বোলিংয়ের প্রশংসা করে তামিম বলেন, ‘আমি খুশি নাসুমের জন্য। যখন সাকিব থাকে, তখন সে ম্যাচ পায় না। তাই এটা দারুণ, সে তার সুযোগগুলো কাজে লাগাচ্ছে।’

টসে হেরে আগে ব্যাট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৫ ওভারে ১০৮ রানে অলআউট হয়। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এটি দ্বিতীয় সর্বনিন্ম ইনিংস। নিজেদের মাটিতেও এটি তাদের দ্বিতীয় সর্বনিন্ম স্কোর। এর আগে ২০১৩ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে তারা ৯৮ রানে অলআউট হয়েছিল।

ইনিংসের ১১তম ওভারে কাইল মেয়ার্সকে (১৭) বোল্ড করে ব্রেক থ্রু এনে দেন তাসকিনের জায়গায় একাদশে আসা মোসাদ্দেক। পরে নাসুম-মিরাজের ঘূর্ণিতে চোখে সর্ষে ফুল দেখার যোগাড় হয় ক্যারিবিয়ানদের। দুজন সাত ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফেরান। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম ১৯ রানে ৩টি, অফস্পিনার মিরাজ ২৯ রানে ৪টি উইকেট পান। ব্রেন্ডন কিং ১১, কেমু পল অপরাজিত ২৫, শাই হোপ ১৮ ও রোভম্যান পাওয়েল ১৩ রান করেন।

জবাবে তামিমের হাফ সেঞ্চুরিতে ২০.৪ ওভারে ১ উইকেটে ১১২ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। তামিম ক্যারিয়ারের ৫৩তম হাফ সেঞ্চুরি করেন। ওপেনিংয়ে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ৪৮, দ্বিতীয় উইকেটে লিটনের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৬৪ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক। শান্ত ২০, তামিম অপরাজিত ৫০, লিটন অপরাজিত ৩২ রান করেন।