ফের সেই গায়ানা এবং আশরাফুল ঝলকে প্রোটিয়া বধ

পনের বছর আগের কথা। ওয়ানডে ক্রিকেটে তখন মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ দল। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে অনুষ্ঠিত ২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ক্রিকেট বিশ্বকে সবচেয়ে বড় চমক উপহার দিয়েছিল হাবিবুল বাশার সুমনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে ভারতকে হারিয়ে বড় অঘটনের জন্ম দেয় টাইগাররা।

আশরাফুল ঝলকে প্রোটিয়া বধ

শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়, সৌরভ গাঙ্গুলিদের ‘বাড়ির’ টিকিট ধরিয়ে দিয়েছিল মাশরাফি-আশরাফুলরা। বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি বাংলার দামাল ছেলেরা। সুপার এইট পর্বে দক্ষিণ আফ্রিকাকেও ক্যারিবিয়ান সাগরে ডুবিয়েছিল বাংলাদেশ। আশরাফুলের কীর্তিতে প্রথমবার প্রোটিয়া বধের ইতিহাস গড়েছিল টাইগার বাহিনী। গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ দল।

চলমান ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মাহমুদউল্লাহ-সাকিবরা আছেন এখন সেই গায়নায়। আশরাফুলের কীর্তির শহরে উইন্ডিজদের বিরুদ্ধে সফরের বাকি চারটি ম্যাচ এখানেই খেলবেন তারা। দুই টেস্ট, দুটি টি-টোয়েন্টি খেলে গায়নায় সফরের ইতি টানবে টাইগাররা। আগামী ৭ জুলাই প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি খেলবে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী। তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে আছে ক্যারিবিয়ানরা।

ডমিনিকায় প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ৩৫ রানে পরাজিত করে স্বাগতিকরা। এর আগে দুই টেস্টেও হেরেছে সফরকারী দল। চলতি সফরে এখনও জয়শূন্য টাইগাররা। ১৫ বছর আগে গায়ানায় ইতিহাস গড়েছিলেন আশরাফুল। সেই কীর্তির প্রেরণায় তৃতীয় ম্যাচে জ্বলে উঠুক লিটন-মোস্তাফিজরা, এমনটাই সবার আশা।

২০০৭ বিশ্বকাপে প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচটি হয়েছিল ৭ এপ্রিল। টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় গ্রায়েম স্মিথের শক্তিশালী দল। তামিম ইকবাল-জাভেদ ওমরের ৪২ রানের ওপেনিং জুটিতে শুরুটা ভালোই ছিল। কিন্তু তারপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শন পোলক, আন্দ্রে নেল, মাখায়া এনটিনি, জ্যাক ক্যালিস, চার্ল ল্যাঙ্গেভেল্টদের তোপ সামলে পঞ্চম উইকেটে ৭৬ রানের জুটি গড়েন আশরাফুল-আফতাব আহমেদ।

দলীয় ১৬০ রানে আফতাব আউট হলেও আশরাফুল খেলে গেছেন ইনিংসের শেষ ওভার অব্দি। অন্তিম ওভারের প্রথম বলে আউট হন ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান। তার আগে খেলেন ৮৩ বলে ৮৭ রানের এক মহামূল্য, ঝকঝকে ইনিংস। যেখানে ছিল ১২টি চার। তামিম ৩৮, জাভেদ ১৭, আফতাব ৩২ এবং শেষ দিকে মাশরাফির ১৬ বলে ২৫ রানের ক্যামিওতে বাংলাদেশ সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ২৫১ রান। প্রোটিয়াদের পক্ষে আন্দ্রে নেল নিয়েছিলেন ৫ উইকেট।

জবাবে বাংলাদেশের ঘূর্ণি তোপে পথ হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। মোহাম্মদ রফিক, আব্দুর রাজ্জাক, সাকিব মিলে বাঁ স্পিনে নাকাল করেন স্মিথ, বাউচার, ক্যালিস, ডি ভিলিয়ার্সদের। ৪৮.৪ ওভারে ১৮৪ রানে অলআউট হয় দলটি। ক্যালিস ৩২, হার্শেল গিবস অপরাজিত ৫৬, স্মিথ ১২, ডি ভিলিয়ার্স ১৫, বাউচার ১২, জাস্টিন কেম্প ৭, অ্যাশওয়েল প্রিন্স ৭, পোলক ১৭ রান করেন।

বাংলাদেশের হয়ে রাজ্জাক ৩টি, সৈয়দ রাসেল-সাকিব ২টি করে এবং রফিক ১টি উইকেট পান। ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলে আশরাফুল হয়েছিলেন ম্যাচ সেরা।