ফখরুল: খালেদা জিয়াই দেশের নেতৃত্ব দিতে সম্পূর্ণ সক্ষম

বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার কোনো সম্ভাবনা নেই। সেইসঙ্গে অন্য কারো হাতে দলের দায়িত্ব হস্তান্তরেরও কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াই দেশ ও দলের নেতৃত্ব দিতে সম্পূর্ণ সক্ষম বলেও জানান তিনি৷ ডয়চে ভেলে বাংলার সাপ্তাহিক ইউটিউব টক শো ‘খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়'-এর অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

দলের দায়িত্বে অন্য কাউকে আনার পরিকল্পনা আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই মুহূর্তে দলই চায় না যে, তারেক রহমান দেশে ফিরুন।

তিনি বলেন, ‘সরকারই তারেক রহমানের দেশে ফেরার পথ বন্ধ করে দিয়েছে৷ অনেক মামলায় একতরফা রায় দেওয়া হয়েছে, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৩৬ থেকে ৩৭টি মামলায় তার অন্যান্য সাজাও দেওয়া হয়েছে৷ সুতরাং দলই মনে করছে, এই মুহূর্তে তার দেশে ফেরাটা নিরাপদ হবে না৷ তাছাড়া এর ফলে দলের সার্বিক নেতৃত্বেও সংকট সৃষ্টি হতে পারে।’

খালেদা জিয়া, ফাইল ছবি

তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানকেও দলের দায়িত্বে আনা নিয়ে বিভিন্ন সময় খবর প্রকাশ হয়েছে। তবে মির্জা ফখরুল এটিকে ‘মনগড়া’ খবর বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘মাঝে-মধ্যে গল্প তৈরি করতে পছন্দ করেন বাংলাদেশের সাংবাদিকরা। সেটা নিয়ে আবার আলোচনাও হয়৷ যা জাতিগত বিনোদনও বটে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুস্থ রয়েছেন। সেইসঙ্গে খালেদা জিয়াও যথেষ্ট সক্ষম রয়েছেন। সুতরাং মামলা থেকে বের হওয়া সম্ভব হলে অথবা ‘রাজনৈতিক পটপরিবর্তন’ হলে খালেদা জিয়াই দেশের নেতৃত্ব দিতে সম্পূর্ণ সক্ষম।

গত ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিনে উপহার পাঠিয়েছিল চীনা দূতাবাস। পরবর্তীতে তা প্রত্যাহার করা হয় বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে। তবে এর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ ব্যাপারে যে খবর প্রকাশ হয়েছে তা এসেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে৷ চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে এমন কোনো বক্তব্য আসেনি। এ ব্যাপারে আমরা নিজেরাও কনফিউজড৷ এতটা কাঁচা নয় চীনের কূটনীতি।’

মহাসচিব হিসেবে বিএনপিকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার যে অভিযোগ রয়েছে- সে ব্যাপারে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা তো তার বিবেচনার বিষয় না। এটা বলবে জনগণ। আর সিদ্ধান্ত নেবে পার্টি। তবে দলের পক্ষ থেকে এখনও তাকে এ ধরনের কিছু বলা হয়নি।

তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘আসলেই কি দেশে কোনো রাজনীতি আছে? ২০১২ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পর থেকে আওয়ামী লীগ একদলীয় সরকার কায়েমের পথে হাঁটছে৷ বিরোধী রাজনৈক দলগুলোকে অকার্যকর করে দেওয়া এবং সেসব দলের নেতৃত্বদের হেনস্তা করা হচ্ছে৷ এখন শুধু রাজনৈতিক দলই নয়, স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না মিডিয়াও।’

‘একটি উদারপন্থী রাজনৈতিক দল বিএনপি৷ কিন্তু বর্তমানে দেশে স্বাভাবিকভাবে রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই৷ গণতন্ত্রের কোনো কিছুই এখন দেশে অবশিষ্ট নেই।’ তবে বিএনপি তাদের রাজনীতির সঠিক পথেই আছে বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।