মূত্র পরীক্ষা করে বানানো হচ্ছে ছাত্রদল নেতা!

মাদকমুক্ত এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছাত্রনেতা বাছাই করতে মূত্র পরীক্ষা নিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সাংসদ শাহ মো. আবু জাফর জেলার বোয়ালমারী উপজেলায় ছাত্রদলের পদপ্রার্থীদের মূত্র পরীক্ষা করান।

ছাত্রনেতা বাছাই করতে মূত্র পরীক্ষার সমালোচনা করেছেন জেলা বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতারা। সূত্র বলছে, বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রদলের মূল কমিটির তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদ প্রত্যাশা করেছেন মোট আটজন। ঘটনাটি গত শুক্রবারের হলেও বিষয়টি নিয়ে মাদারিপুরসহ সারাদেশে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। পক্ষে বিপক্ষে অনেকেই নানা মত তুলে ধরেছেন। আবু জাফর মাদকমুক্ত ছাত্রনেতা বাছাই করতে নিজের বাড়িতেই আট তরুণের মূত্র সংগ্রহ করেন।

দুইজন প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্র বলেন, মূত্র সংগ্রহ করেন উপজেলার পৌর ছাত্রদলের সভাপতি রোকনুজ্জামান। আর মূত্র দেন উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতির পদপ্রার্থী ওয়ালিদ মুরছালিন ও হাসান সালেহ, উপজেলার সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী পিকুল মিয়া, বায়েজিদ খান রাব্বি ও আনিসুজ্জামান তপু। এছাড়া পৌর সভাপতি পদপ্রার্থী আশিক ও রনি মিয়া পাশাপাশি সরকারি বোয়ালমারী কলেজ শাখার সভাপতি পদপ্রার্থী মাহফুজ মিয়া। মাদকমুক্ত হলেই নেতা হওয়া যাবে এমন আশায় এসব ছাত্রনেতা মূত্রের নমুনা জমা দেন।

শাহ মো. আবু জাফর এ প্রসঙ্গে বলেন, 'ছাত্রদল করতে হলে অবশ্যই মাদকমুক্ত হতে হবে। আজকের ছাত্ররাই আগামীদিনে বিএনপির কাণ্ডারি, তাদের অবশ্যই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া উচিত। পদপ্রার্থীরা গাঁজা, ইয়াবা বা ফেনসিডিলে আসক্ত কি না সেই পরীক্ষাই করা হয়েছে।'

তিনি আরো বলেন, 'গতকাল রোববার রাতে ছাত্রদের মূত্র পরীক্ষার ফলাফল পেয়েছি। ফলাফলে দেখা গেছে আট তরুণের মধ্যে ছয়জনই মাদকমুক্ত। বাকি দুজন মাদকাসক্ত। তবে কারা মাদকাসক্ত আর কারা মাদকমুক্ত এ বিষয়ে কোন নাম প্রকাশ করা হয়নি।'

মূত্র পরীক্ষায় অংশ নেয়া সভাপতি পদপ্রার্থী ওয়ালিদ মুরছালিন বলেন, 'মাদকাসক্তরা সাধারণ ছাত্রদের আদর্শ হতে পারে না। আবু জাফর সাহেব যে উদ্যোগ নিয়েছেন সেটি গোটা বাংলাদেশেই অনুকরণীয় হওয়া উচিত। সকলেই স্বেচ্ছায় এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

এদিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোদাররেছ আলী বলেন, 'ঘটনাটি হাস্যকর। ছাত্ররা নৈতিকভাবে আহত হতে পারে। এটা কোন পদ্ধতি নয়। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি বেনজীর আহমেদ বলেন, 'বিষয়টি নিন্দনীয়। তিনি বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন।'