বজ্রপাতে ৪ জেলায় ৭ জনের প্রাণহানি

বৃহস্পতিবার রাঙ্গামাটি, সিলেট, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজার জেলায় বজ্রপাতের আঘাতে অন্তত সাতজন প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৯ জন।

বজ্রপাতের ছবি

রাঙ্গামাটিতে তিনজনের মৃত্যু: রাঙ্গামাটি জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রপাতের আঘাতে তিনজন নিহত এবং ৭ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন রাঙ্গামাটি জেলা শহরের সিলেটি পাড়ার বাসিন্দা নাজির আহমেদ (৫০), বাঘাইছড়ি উপজেলার লাল মিয়ার স্ত্রী বাহারজান বেগম (৫৫) এবং সাজেকের ত্রিপুরা গৃহিণী (৩৭)।

রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শওকত আকবর খান জানান, সকালে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতের আঘাতে নাজির আহমেদ ঘটনাস্থলেই মারা যান।

এদিকে, রুপকারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জেসমিন চাকমা জানান, বৃষ্টির মধ্যে গরু মাঠ থেকে আনতে গিয়ে বজ্রপাতের আঘাতে বাহারজান মারা যান। এছাড়া বজ্রপাতের সময় একটি ছাগলও মারা যায়।

অপরদিকে, সাজেকের লংথিয়ানপাড়ায় বাড়ির উঠোনে কাজ করার সময় বজ্রপাতের আঘাতে ত্রিপুরা গৃহিণী নিহত হন।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার জানান, উপজেলায় বাহারজান ও ত্রিপুরার মৃত্যু হয়েছে এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজারে দুই শ্রমিকের মৃত্যু: কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার ছড়ি পাড়ায় আলাদা আলাদা স্থানে বজ্রপাতের আঘাতে দুই শ্রমিক নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন উপজেলার জমিরের ছেলে দিদারুল ইসলাম (৩৫) ও জামালের ছেলে মো. আরমান (২৫)।

মাগনামা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনুস চৌধুরী জানান, ভোরের দিকে কোদাইল্লাদিয়ায় লবণ ক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতের আঘাতে দিদার ঘটনাস্থলেই মারা যান।

এদিকে, ভোরবেলা ক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতের আঘাতে আরমান নিহত হন বলে জানান রাজাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম শিকদার।

খাগড়াছড়িতে স্কুলছাত্রের মৃত্যু: খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলায় ঝড়ের সময় আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতের আঘাতে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছেন। নিহত ছাত্রের নাম ইয়াসিন আরাফাত। উপজেলাটির ইব্রাহিম পাড়ার বাসিন্দা তিনি।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সিলেটে কৃষকের মৃত্যু: সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দিঘীরপাড়া পূর্ব ইউনিয়নে ধান কাটার সময় বজ্রপাতের আঘাতে এক কৃষক নিহত এবং দুইজন আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির নাম বাবুল আহমেদ (৪৮)।

দিঘীরপাড়া পূর্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল মুমিন চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় বাবুলের ভাতিজা ফাহিম আহমেদ (১৭) এবং বাবু বিশ্বাসের ছেলে প্রদীপ বিশ্বাসও আহত হন।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতি বছর গড়ে ২৫০ জন মানুষ বজ্রপাতে নিহত হন। এতে প্রচুর পরিমাণ গবাদিপশুও প্রাণ হারায় বা আহত হয়। প্রধানত এপ্রিল থেকে মে-জুন মাস পর্যন্ত দেশে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে এবং হাওর এলাকায় মৃত্যু বেশি হয়।

বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০১১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশে বজ্রপাতে ২ হাজার ১৬৪ জন মানুষ মারা গেছেন। এই সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে, তাই ২০১৬ সালে সরকার একে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে।